বকরি ইদ ঘিরে হিংসায় উত্তাল ওড়িশার বালাসোর, জারি হল কারফিউ

বালাসোর, ১৮ জুন –  বকরি ইদে গরু কুরবানি দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠল ওড়িশার বালাসোর। মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে গো-হত্যার অভিযোগ তুলে ভয়াবহ হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। হিংসায় ১৫ জন আহত হন, যাঁদের মধ্যে ৫ জন পুলিশ কর্মী।পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হলে ওই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এলাকায় কার্ফু জারি করেছে প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী।
 
পুলিশ সূত্রে খবর, বালেশ্বরের পাত্রপাড়া এলাকায় কমবেশি সম সংখ্যক হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি বাস করেন। সোমবার ওই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের স্থানীয় কিছু মানুষের চোখে পরে লাল রক্ত বইছে নিকাশি নালা দিয়ে। দেখার পরই সন্দেহ হয় তাঁদের। বকরি ইদে এলাকায় গোহত্যা হয়েছে সন্দেহ করেন হিন্দুরা। এলাকার কয়েকজন মুসলিম পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এরপর অপরপক্ষের উপর চড়াও হন তাঁরা । মুহূর্তের মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া শুরু করেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে এলে হিংসা আরও ভয়াবহ আকার নেয় । সূত্রের খবর, এই হিংসায় ১৫ জন আহত হন যাঁদের মধ্যে রয়েছেন ৫ পুলিশকর্মীও। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় ওই এলাকায়।
 
রাত গড়ালে পরিস্থিতি আরও গুরুতর আকার নেয়। ইট, পাথর, কাঁচের বোতল নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা চালায়। একে অপরের বাড়িতে গিয়ে আক্রমণ করে । হিংসা ছড়িয়ে পড়ে গোলাপোখারি, মোতিগঞ্জ ও সিনেমাচক এলাকায়। এই সব জায়গায় একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। আগুন ধরানো হয় একাধিক বাড়িতে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে গুলি ছুড়তে হয় পুলিশকে। বালাসোরের পুলিশ সুপার সাগরিকা নাথ বলেন, ‘হিংসা যাতে না ছড়ায় তার জন্য বালাসোর শহর এলাকায় আমরা কার্ফু জারি করেছি। গুজব যাতে ছড়িয়ে না পড়ে  তার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করা হয়েছে। কেউ যাতে বাড়ির বাইরে না যান তার জন্য  গোটা এলাকার মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে।’ হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে  পুলিশ সুপার জানান।
 
উল্লেখ্য, বিজেডির নবীন সরকারের পতনের পর সম্প্রতি বিজেপি সরকার গঠিত হয়েছে ওড়িশায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মোহন মাঝি। তারপর এই হিংসার ঘটনায় উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। সাধারণ মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছে  নতুন সরকার।