করোনাভাইরাসের প্রকোপের জেরে গাড়ি শিল্প আগে থেকেই ধুকছিল। কর্মী সংকোচনও শুরু হয়েছিল সেই সময় থেকে। দু’মাসের বেশি লকডাউন থাকায় অটোমোবাইল শিল্প ধুঁকছে। বিক্রি নেই তাই উৎপাদনও বন্ধ। ফলে বিপুল কর্মীকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না, ফলে ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা বাড়ছে। শুধুমাত্র হরিয়ানার গুরুগ্রামের অটোমোবাইল হাবে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষ চাকরি খোয়াতে পারেন, আশঙ্কা করছে শিল্পমহল।
আগামী ৬ মাসের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর সেই অর্থে কোনও সম্ভান্না দেখা যাচ্ছে না, উল্টে সঙ্কট আরও গভীর হতে পারে। মারুতি, হিরো, হুণ্ডা থেকে শুরু করে অধিকাংশ গাড়ি শিল্পের উৎপাদন ক্ষেত্র হচ্ছে গুরুগ্রাম-মানেসর-বাওয়াল।
এছাড়া এই অটোমোবাইল শিল্পকে ঘিরে রয়েছে অনেক সহযোগী সংস্থা। এই হবে ৬০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। আর সারা দেশে সংখ্যাটা প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ। মারুতির অন্যতম ভোর বেলসোনিক অটো কম্পোন্যান্ট ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড। তার ১৩০০ কর্মীর মধ্যে ইতিমধ্যে ৩০০ অস্থায়ী কর্মীকে ছেটে ফেলেছে।
কারণ সংস্থার থেকে বলা হচ্ছে, তাদের উৎপাদন ইতিমধ্যে ১৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। জুলাইয়ে সেটা পৌছে যেতে পারে ৪০ শতাংশে। লকডাউনের মধ্যে যে বকেয়া হয়েছিল স্থায়ী-অস্থায়ী গুরুগ্রামের সব কর্মীকে মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উৎপাদন ছাড়া কর্মীদের রাখা খুব কঠিন।
একইভাবে রিকো অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ১১৯ জন স্থায়ী কর্মীকে ছেঁটে ফেলেছে। তবে, সংস্থার কর্মীসংগঠন আইনি লড়াইয়ের পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সব কর্মীকে এক শিফটে কাজ করান যাচ্ছে না। ফলে মালিকপক্ষ চাইলেও উৎপাদন ১০০ শতাংশ করতে পারবে না।
সেই সঙ্গে দক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে যাওয়ায় শ্রমিকের অভাব বোধ হচ্ছে অধিকাংশ সংস্থাই ১০ থেকে ৪০ শতাংশ উৎপাদন কম করছে। আর অন্যদিকে, চাহিদা যে রয়েছে সেটা পণ্যভিত্তিক। লকডাউনের মানুষের আয় কমে গিয়েছে ফলে মানুষ বিলাসিতা আর ভোগ্যপণ্যে বেশি খরচ করতে চাইবে না।