দেরাদুনের বিখ্যাত ডান স্কুল চত্ত্বরে হামলা চালাল একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। হাতুড়ি , কোদাল, কুড়ুল দিয়ে ভেঙে দেওয়া হল মাজারটি। দুন স্কুলের ভিতরেই ছিল এই মাজার। হঠাৎই আক্রমণ চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ইসলামিক এই প্রার্থনাস্থলটি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই মাজার ভাঙার ভিডিও। দেরাদুনের জেলাশাসক জানান, ‘আমরা
একটি টিম পাঠিয়েছি, তারা তদন্ত করে দেখছে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যেহেতো মাজারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে , সেজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। প্রশাসনের সঙ্গে এই মাজার ভাঙার কোনও যোগ নেই।
দুন স্কুল দেশের অন্যতম সেরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ব্রিটিশ আমল থেকে চলছে। রাজীব গান্ধী, রাহুল গান্ধী, নবীন পট্টনায়ক, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা এই স্কুলেই পড়েছেন। পড়েছেন বহু বুদ্ধিজীবী ও সাহিত্যিকও। বিখ্যাত এই স্কুলের ভিতরে মাজার কেন থাকবে সেই প্রশ্ন তুলে কয়েকদিন আগেই বিক্ষোভ দেখায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কিছু সদস্য। তার পরই সেটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর মেলে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই মাজারটি বহুদিন ধরেই রয়েছে। সম্প্রতি সেটির সংস্কার করা হচ্ছিল। মাজার ভাঙার কোনও নির্দেশ স্কুল কর্তৃপক্ষ দেয়নি। আবার স্থানীয় জেলা প্রশাসনও ওই মাজার ভাঙার ‘দায়’ অস্বীকার করেছে। দেরাদুনের জেলাশাসক সেভিন বনসল জানিয়েছেন, ‘আমরা মাজারটি ভাঙার কোনও নির্দেশ দিইনি। তবে আমাদের তরফে একটা দল পাঠানো হয়েছিল পর্যবেক্ষণের জন্য। সেখানে মহকুমা শাসকও ছিলেন।’
স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি দুন স্কুলের ভিতরের ওই মাজার ভেঙে যাওয়ায় খুশি। স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন উত্তরাখণ্ড রক্ষা অভিযানের এক নেতা বলছেন, “যে-ই কাজটি করুক, আমি স্বাগত জানাই। স্কুলের ভিতরে মাজার কেন থাকবে?’
অন্যদিকে দুন স্কুলের ভিতরের ওই মাজার এবং সংলগ্ন এলাকা তাঁদের সম্পত্তি বলে দাবি করেছে উত্তরাখণ্ড ওয়াকফ বোর্ড। তাদের দাবি, এখানে ৫৭ একর ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। ওয়াকফ বোর্ড জানায়, ইতিমধ্যে বহু মাজার মাদ্রাসা স্কুল ভাঙা পড়েছে। বহু সম্পত্তি সরকার উদ্ধার করেছে। তাই এই মাজার সংলগ্ন সম্পত্তির মালিকানা কাদের তা এখনও স্পষ্ট নয়।