দিল্লি, ২০ জুলাই– চাকরি জীবনের আরও ৫ বছর বাকি থাকলেও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিদায় নিলেন ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান মনোজ সোনি৷ শনিবারই জানা যায়, ইউপিএসসির চেয়ারপার্সন পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মনোজ সোনি৷ তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন৷
২০২৩ সালের মে মাসে ইউপিএসসি বোর্ডের দায়িত্ব নেন মনোজ৷ তবে ২০১৭ সাল থেকেই তিনি বোর্ডে রয়েছেন৷ তার আগে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞ হিসাবে গুজরাতের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ছিলেন তিনি৷ ২০০৫ সালে তিনিই ছিলেন দেশের সবচেয়ে কমবয়সি উপাচার্য৷ ইউপিএসসি চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মধ্যেই তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে ইস্তফা জমা দিলেন৷ তিনি ২০২৩-এর ১৬ মে দায়িত্ব নেন৷ তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৯-এর ১৫ মে৷ এখনও পাঁচ বছর কাজের মেয়াদ বাকি আছে তাঁর৷
শিক্ষানবিশ আইএএস অফিসার পূজা খেড়করের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঘিরে ইউপিএসসির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ওই তরুণী অফিসারের বিরুদ্ধে শুক্রবার এফআইআর করেছে ইউপিএসসি৷ কেন তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর চিঠি ধরিয়েছে ইউপিএসসি৷
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নথি জাল করে বিশেষভাবে সক্ষম কোটায় চাকরি পেয়েছেন তিনি৷ ইউপিএসসি-র ভূমিকা নিয়েও এর ফলে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে৷ অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কী করে ইউপিএসসি-র মতো প্রতিষ্ঠান সব কিছু যাচাই না করে ওই তরুণীকে মনোনীত করেছিল৷ সর্ষের মধ্যে ভূত থাকার অভিযোগও উডি়য়ে দেওয়া হচ্ছে না৷
মনে করা হচ্ছে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের পিছনে এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিও একটি কারণ হতে পারে৷ তবে নিয়ম হল, রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠি হলেও তা প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীনে থাকা ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিং গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে৷ তারা এখনও পদত্যাগপত্র নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি৷
তবে সোনির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি পুজার ঘটনার সঙ্গে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের কোনও সম্পর্ক নেই৷ তিনি দিন পনেরো আগে পদত্যাগপত্র পাঠান৷ সরকার সেটা এখনও গ্রহণ করেনি৷ সোনি আগেও পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন৷ ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, তিনি সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক কাজে সময় দিতে চান৷
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই পূজার বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপের পথে ইউপিএসসি৷ নাম-পরিচয় গোপন করে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে পূজাকে নোটিস পাঠিয়েছে সংস্থা৷ পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে এফআইআর৷ নির্ধারিত সীমার বেশিবার পরীক্ষা দিতে নাম, পরিচয় ও বয়স বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল পূজার বিরুদ্ধে৷ এই মর্মেই পূজাকে ইউপিএসসি-র তরফে নোটিস পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে কেন তাঁর প্রার্থীপদ বাতিল করা হবে না৷ পাশাপাশি ভবিষ্যতে আর কোনও সরকারি চাকরির পরীক্ষাতে যাতে অভিযুক্ত বসতে না পারে সে বিষয়েও পদক্ষেপের পথে হাঁটতে চলেছে কর্তৃপক্ষ৷ সব মিলিয়ে চাকরি হারানোর আশঙ্কা আরও প্রবল হতে চলেছে পূজার জন্য৷ এই পরিস্থিতিতে ইউপিএসসির চেয়ারপার্সনের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন মনোজ৷