নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন নিয়ে চলতি বছর ফেব্রুয়ারীতে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় ১,৭৫,০০০ পাতার চার্জশিট ফাইল করল দিল্লি পুলিশ। চার্জশিটে পনেরাে জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত হিসেবে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে বুধবার দিল্লি পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে।
সেই চার্জশিটে সাসপেন্ড হওয়া আপ কাউন্সিলর তাহির হােসেনের নাম রয়েছে। তবে, কয়েকদিন আগে গ্রেফতার হওয়া উমর খালিদ এবং শরজিল ইমামের নাম নেই মূল চার্জশিটে। যদিও পুলিশ বলছে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে তাদের নাম থাকবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ এবং অস্ত্র আইনের একাধিক ধারায় অভিযােগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশের দাবি, হােয়াটস অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ওই হিংসায় ইন্ধন দেওয়া হয়েছিল।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডােনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় আচমকাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লি। ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। হানাহানিতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও অনেকে। মােট ৭৫১ টি মামলা দায়ের করা হয় দিল্লির হিংসাকে কেন্দ্র করে। এর মধ্যে ক্রাইম ব্রাঞ্চের একটি বিশেষ দল ৫৯ টি মামলার তদন্ত করছে। জেলা পুলিশ ৬৯১ টির মামলা তদন্ত করছে। দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ সেল গঠন করে এই মামলাগুলিকে তদারকি করা হয়।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশােধনী আইন কার্যকর করা নিয়ে কেন্দ্রের গােয়ার্তুমি মনােভাবকে একদল সমর্থন করলেও অমুসলিমদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনে বলা হয়েছিল, প্রতিবেশী তিন দেশ থেকে ভারতে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, যাকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লােকজন বৈষম্যমূলক আচরণ বলে ব্যাখ্যা করেন।
আইনের পক্ষে সওয়াল করা মানুষগুলাের সঙ্গে অসমর্থক গােষ্ঠীর মানুষদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ানক হয়ে দাড়িয়েছিল যে, শহরের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছিল। সংখ্যালঘু কলােনিতে ঢুকে তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কয়েকশাে মানুষ ঘরহীন হয়ে পড়ে। ঘটনায় ২০০ জন জখম হয়েছিল। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সময় দিল্লি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কেননা, পুলিশ দাঙ্গাকারীদের সহায়তা করেছিল বলে অভিযােগ করা হয়েছিল। দাঙ্গার ঘটনায় ৫০ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তিও নষ্ট হয়।