জম্মু-কাশ্মীরে হিংসা থামার লক্ষণ নেই। কিশতওয়ার জেলায় দুই ‘ভিলেজ ডিফেন্স গার্ড’কে অপহরণ করে খুন করল জঙ্গিরা। নিরাপত্তা বাহিনী এখনও তাদের দেহ উদ্ধার করতে পারেনি। ‘ভিলেজ ডিফেন্স গার্ড’-এর দুই সদস্য নাজির আহমেদ এবং কুলদীপ কুমারকে খুঁজে বের করতে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। দু’জনেই গবাদি পশু চরাতে পাশের জঙ্গলে গিয়েছিল, কিন্তু আর ফিরে আসেনি।
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং তাঁর বাবা তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লাহ কিশতওয়ারে দুই ভিডিজি সদস্যকে হত্যার নিন্দা করেছেন। তাঁরা বলেন, এই ধরনের বর্বর আক্রমণ জম্মু ও কাশ্মীরে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি অর্জনে একটি উল্লেখযোগ্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই শোকের মুহূর্তে নিহতদের পরিবারের পাশে জম্মু ও কাশ্মীর সরকার রয়েছে।
কাশ্মীর টাইগাররা এই হত্যার দায় নিয়েছে। কাশ্মীর টাইগার্সের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভিলেজ ডিফেন্স গার্ড’-এর দুই সক্রিয় সৈন্য, কুলদীপ কুমার এবং নাজির মুজাহিদিন ইসলাম কিশতওয়ার এলাকায় আসে। কাশ্মীরের মুজাহিদিনরা প্রথমে তাঁদের উপেক্ষা করলেও পরে ধরে ফেলে। দুজনেই তাঁদের অপরাধ স্বীকার করেছে। এর পর তাঁদের শাস্তি দেওয়া হয়।
সেনার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, গত কয়েক মাস ধরে এই এলাকায় জঙ্গি কার্যকলাপ দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের সময় অন্তত দু’বার এই এলাকায় জঙ্গি ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।
সূত্রের খবর, দুই ‘ভিলেজ ডিফেন্স গার্ড’ সকালে পশুদের নিয়ে চত্রুর কুন্তওয়াড়ার জঙ্গলে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁরা ফেরেনি। গ্রামের বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার আগেই জঙ্গিরা তাঁদের ছবি প্রকাশ করে। একই সঙ্গে জানায়, তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।
কুলদীপ কুমারের ভাই পৃথ্বী বলেন, আহমেদ আর আমার ভাইকে জঙ্গিরা অপহরণ করে হত্যা করেছে। ভাই ‘ভিলেজ ডিফেন্স গার্ড’ ছিল। প্রতিদিনের মতোই গবাদি পশু চরাতে গিয়েছিলেন। ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চলছে গোটা এলাকায়। তবে ওদের লাশ এখনও উদ্ধার করা যায়নি। আমাদের বাবা অমর চাঁদ এক সপ্তাহ আগে মারা গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভাইয়ের মৃত্যু পরিবারের জন্য একটা বিরাট ধাক্কা।
অন্যদিকে, উত্তর কাশ্মীরের সোপোরের সাগিপোরা এলাকায় তল্লাশি অভিযানের সময় কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা গিয়েছে। একটি নির্দিষ্ট সূত্রের ভিত্তিতে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাগিপোরায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে। সেই সময় কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়, এরপর ওই এলাকা ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। দুই থেকে তিনজন জঙ্গি আটকে রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।