চুক্তিতে দেখা যাচ্ছে, প্রথম চুক্তিটি হয় ভারতের তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের মধ্যে৷ সেখানে লেখা হয়, মানস যাত্রার জন্য লিপুলেখ পাসের রুট খুলে দেওয়া হচ্ছে৷ কৈলাস মানস সরোবর যাত্রার দ্বিতীয় রুট নাথু লা পাসের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করার জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪-সালে ইয়ের সাথে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের দ্বিতীয় চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়।
কিন্তু, কোভিডের দোহাই দিয়ে ২০২০ সাল থেকে ওই দু’টি রুটই একক সিদ্ধান্তে বন্ধ করে রেখেছে চিন৷ যদিও ভারতের সঙ্গে হওয়া দুই চুক্তিতেই লেখা রয়েছে, কোনও দেশই একক সিদ্ধান্তে এই রুট বন্ধ করতে পারবে না, প্রতি পাঁচ বছরে এই চুক্তির মেয়াদবৃদ্ধি হতে থাকবে যতক্ষণ না পর্যন্ত এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কোনও মতানৈক্য তৈরি হয়৷ তাহলে কি মানস যাত্রা নিয়ে সরাসরি চুক্তির খেলাপ করছে চিন?
বাস্তব ছবিটা হল, এই দুই চুক্তির কোনওটিই মানছে না চিন৷ উপরন্তু, নেপাল হয়ে মানস যাওয়ার রাস্তার ক্ষেত্রেও ভারতীয়দের উপর চাপানো হচ্ছে অসম্ভব নানারকম বিধি। শুধু তাই নয়, নেপাল হয়ে মানস যাওয়ার রুট এতটাই ব্যয়সাধ্য যে, সাধারণ পুণ্যার্থীদের ক্ষমতার ধরাছোঁয়ার বাইরে৷এবছর যেমন, নেপালের নেপালগঞ্জ থেকে বিমানে ২৭,০০০ ফুট উচ্চতা থেকে কৈলাস পর্বত এবং মানস সরোবরের দর্শন করতে পেরেছেন ৩৮ জন ভারতীয়৷ মাটিতে নামার কোনও সুযোগ তাঁরা পাননি৷
চিনের এই অনমনীয়তার কারণে উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড়ের ধারচুলায় লিপুলেখের চূড়ায় একটি জায়গা তৈরি করা হয়েছে যেখান থেকে ভারতীয়রা কৈলাস পর্বতের দর্শন পাবেন৷ এখান থেকে কৈলাস পর্বতের দূরত্ব মাত্র ৫০ কিলোমিটার৷ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এই দর্শন পর্ব৷ দর্শনার্থীদের লিপুলেখ পর্যন্ত গাড়িতে গিয়ে ভ্যানটেজ পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছতে ৮০০ মিটার ট্রেক করতে হবে৷
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন হল, চিন কি ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন করে হিন্দুদের পবিত্রতম স্থান কৈলাস ও মানস সরোবরে ভারতীয়দের প্রবেশে এককভাবে বাধা দিতে পারে ? এক্ষেত্রে ভারতের উচিত দৃঢ় পদক্ষেপ করা, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা ।