শ্রীনগর থেকে জম্মু যাওয়ার পথে মৃত্যু দুই পুলিশকর্মীর

রবিবার শ্রীনগর থেকে জম্মু যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল জম্মু ও কাশ্মীরের দুই পুলিশকর্মীর। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রবিবার শ্রীনগর থেকে জম্মু যাওয়ার পথে উধমপুরে বারামুল্লা জেলার সোপোর এলাকার দুই পুলিশকর্মী নিহত হন। জঙ্গি হামলা হয়েছে, না কি আত্মহত্যা, তা নিয়েই এখন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। যদিও পুলিশ প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে করছে। একে-৪৭ থেকে গুলি চালানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রিয়াসি জেলার সাবসিডিয়ারি ট্রেনিং সেন্টার তালওয়ারায় (এসটিসি) যাওয়ার পথে সোপোরের দুই পুলিশকর্মী বিভাগীয় গাড়ির ভিতরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আজ সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ উধমপুর জেলার রেহেম্বল থানার কাছে খবর আসে, কাশ্মীর থেকে রিয়াসির এসটিসি তালওয়ারায় পুলিশের বিভাগীয় গাড়িতে গুলি চালানোর খবর মিলেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বারামুলার সোপোর থেকে রিয়াসির এসটিসি তালওয়ারার দিকে যাওয়ার পথে দুই পুলিশকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এটি ভ্রাতৃহত্যা ও আত্মহত্যার ঘটনা।


পুলিশের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন এবং তদন্ত চলছে। তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। নিহত দুই পুলিশ সদস্যের সহকর্মীদের কাছ থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, অপরাধের ঘটনাস্থল পরীক্ষা করতে এবং প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে ডাকা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, স্থানীয় বাসিন্দারা রবিবার সকালে উধমপুরের কালীমাতা মন্দিরের কাছে একটি জিপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। দীর্ঘক্ষণ ধরে গাড়িটি সেখানে দাঁড়িয়ে থাকায় সন্দেহ হয় তাঁদের। সন্দেহ হওয়ায় জিপের সামনে যেতেই হতবাক হয়ে যান তাঁরা। জিপের ভিতরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে দুই পুলিশকর্মীর দেহ পড়েছিল। পুলিশের খবর দেন তাঁরা। পুলিশ এসে দেহ দু’টি উদ্ধার করে। মৃতদের মধ্যে এক জন পুলিশের গাড়ির চালক, অন্য জন হেড কনস্টেবল। ওই গাড়িতে আরও এক পুলিশকর্মী ছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  তবে তাঁর চোট লাগেনি।

অতীতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে আত্মহত্যা ও ভ্রাতৃঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালের জুনে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ২৩ বছর বয়সী স্পেশাল পুলিশ অফিসার (এসপিও) কাঠুয়া জেলায় তাঁর সার্ভিস রাইফেল দিয়ে নিজেকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিকূল কর্মপরিবেশ, দীর্ঘ দায়িত্ব পালন, বিনোদনের সুযোগ না পাওয়া এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াকে দায়ী করেছেন। যথাযথ কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণের অভাবকেও বাহিনীর কর্মীদের মধ্যে এই জাতীয় অনিয়মিত আচরণের কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই সমস্যাগুলির সমাধান – পরিবারগুলিতে পুনরায় যোগদানের জন্য পর্যায়ক্রমিক ছুটি, নিয়ন্ত্রিত ডিউটি আওয়ার, বিনোদনমূলক সুবিধা। জওয়ান এবং কমান্ডিং অফিসারদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এই বিপদকে অনেকাংশে রোধ করেছে।