• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

শাহিন বাগ : বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে দুই মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করল সুপ্রিম কোর্ট

শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য সোমবার দুই মধ্যস্থতাকারী নিয়ােগ করল সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রীম কোর্ট (File Photo: IANS)

শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য সোমবার দুই মধ্যস্থতাকারী নিয়ােগ করল সুপ্রিম কোর্ট। এরা হলেন, বরিষ্ঠ আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে এবং সাধনা রামাচন্দ্রন। সুপ্রিম কোর্ট এদিন একটি আবেদনের ভিত্তিতে শাহিন বাগের বিগত ৬০ ধরে চলা। সংশােধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের লক্ষ্যে এদিন এই দু’জন মধ্যস্থতাকারী নিয়ােগ করেছে যারা শাহিন বাগে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বােঝাবেন যাতে তারা তাদের বিক্ষোভ প্রদর্শন অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান। যেখানে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হবে না। 

শাহিন বাগ ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, শাহিন বাগে প্রতিবাদকারীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন নিয়ে কোনও সমস্যা নেই কারণ বিক্ষোভ প্রদর্শন মানুষের মৌলিক অধিকার। কিন্তু তাই বলে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ যাতে সমস্যায় না পড়েন সেটা দেখাও কর্তব্য। তাই শাহিন বাগে রাস্তা অবরােধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা যায় না। কারণ এর ফলে বিড়ম্বনায় পড়ছে সাধারণ মানুষ। সংশােধিত নাগরিকত্ব আইন, নাগরিকপঞ্জী ও জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টারের বিরুদ্ধে শাহিনবাগের মহিলারা দু’মাস ধরে টানা চব্বিশ ঘন্টা রাস্তায় অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। 

যাত্রীদের দৈনন্দিন সমস্যার কথা মাথায় রেখে শীর্ষ আদালত শাহিন বাগে চলা প্রতিবাদ বিক্ষোভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। প্রতিবাদ বিক্ষোভকে অন্যত্র কোথাও সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় কিনা তা নিয়ে মত প্রকাশ করে। বিচারপতি কাউল বলেন, আমরা কখনােই এটা বলছি না যে, মানুষের বিক্ষোভ প্রদর্শনের কোনও অধিকার নেই। কিন্তু প্রশ্ন, কোথায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ করা যায়– কেননা, আজ একটা আইনের বিরােধিতায় যদি লােকজন রাস্তা আটকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন, তাহলে আগামিকালও অন্য কোনও আইনের বিরােধিতায় রাস্তা আটকে সকলে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন এবং তাতে অসুবিধায় পড়বেন সাধারণ মানুষ। 

শীর্ষ আদালত শুনানির শেষে বলে, বিক্ষোভকারীরা নির্দিষ্ট এলাকায় প্রতিবাদ করতে পারেন, কিন্তু তারা রাস্তা অবরােধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে পারেন না। তারা কোনওভব সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলতে পারেন না। 

অ্যাডভােকেট অমিত সাহানি ও ভারতীয় জনতা পার্টি নেতা নন্দ কিশাের গর্গের আবেদনের শুনানি করতে গিয়ে বিচারপতি কউল ও বিচারপতি জোসেফের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, প্রতিবাদকারীরা রাস্তা অবরােধ করতে পারেন না। অনির্দিষ্টকালের জন্য তারা রাস্তায় প্রতিবাদ দেখাতে পারেন না। যদি প্রতিবাদ দেখাতে চান, তাহলে প্রতিবাদ বিক্ষোভের জন্য চিহ্নিত নির্দিষ্ট জায়গায় প্রতিবাদ করতে হবে। 

বিচারপতি জানান, আইনটি কার্যকর হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানানাে হয়েছে। এটাও ঠিক যে, কিছু মানুষ আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করতে চান। প্রতিবাদ প্রদর্শনের জন্য একটা নির্দিষ্ট জায়গা থাকা উচিত, যেখানে ইচ্ছে সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা যায় না। নইলে মানুষ যেখানে সেখানে প্রতিবাদ করবেন। অনেক দিন ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে। 

সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা উল্লেখ করে অ্যাডভােকেট শশাঙ্ক দেও সুধী আর্জি করে বলেন, অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করতে। যদিও কোর্টের তরফে আবেদনটি খারিজ করে বলা হয়, ৫০ দিন অপেক্ষা করতে পারলেন, আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশে জানিয়েছে যে মধ্যস্থতাকারীদের নিয়ােগ করা হয়েছে তারা শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে আদালতে একটি রিপাের্ট দাখিল করবেন। সেই রিপাের্টের প্রেক্ষিতেই আগামী সােমবার অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট।