গত ১৩ অক্টোবর কানাডা পুলিশের ‘ইন্টিগ্রেটেড হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন টিম’ -এর রিপোর্ট উদ্ধৃত করে ট্রুডো সরকার জানিয়েছিল সে দেশের মাটিতে খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে খুনের ঘটনায় ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয়ের ‘স্বার্থ’ জড়িত ছিল। ওই অভিযোগের পরই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়। সঞ্জয় বর্মা-সহ কয়েক জন শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে আনে নরেন্দ্র মোদী সরকার। একইসঙ্গে দিল্লির কানাডা হাই কমিশনের কয়েক জন কূটনীতিককেও বহিষ্কার করা হয় ।
উল্লেখযোগ্য হল, এখন ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টির অন্দরেই ট্রুডোর পদত্যাগের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। জানা গিয়েছে, লিবারেল পার্টির একাধিক সাংসদ প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ইস্তফার দাবি করেছেন। আগামী ২৮ অক্টোবর সময় বেঁধে দিয়েছেন তাঁর দলের সাংসদরা। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চূড়ান্ত ভারত বিরোধিতার মাশুল গুনতে হচ্ছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে। এই আবহে ভারতে ফিরে সঞ্জয় শুক্রবার বলেন, ‘‘ট্রুডোর বৃত্তে অনেকে আছেন, যাঁরা ভারতবিরোধী এবং খলিস্তানপন্থী। ২০১৮ সালে তাঁর ভারত সফরের সময় কোন খলিস্তানপন্থীদের দেখা গিয়েছিল, তা আমরা সকলে জানি।’’ প্রসঙ্গত, ট্রুডোর ওই সফরের সময় কানাডা সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল খলিস্তানপন্থী জশপাল সিংহ অটওয়ালকে।
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে পাল্টা অভিযোগ করা হয় যে, কানাডার আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠীগুলির সমর্থন পাওয়ার জন্য ট্রুডো সরকার নতুন করে নিজ্জর বিতর্ক তৈরী করছে। খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করেছিল ভারত। তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডায় একটি গুরুদ্বারের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পরে নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। যদিও কানাডায় প্রাক্তন ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয় বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত ট্রুডো সরকার এ বিষয়ে আদালতগ্রাহ্য কোনও তথ্যপ্রমাণ দিতে পারেনি।’
সঞ্জয় বর্মা জানান, ভারত থেকে যেসকল পড়ুয়ারা কানাডায় যান, তাঁদের মগজধোলাই করে দলে টানার চেষ্টা করে খালিস্তানিরা। এই পরিস্থিতিতে কানাডায় যে সব অভিভাবকরা উচ্চশিক্ষার জন্য সন্তানদের পড়তে পাঠান তাঁদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন সঞ্জয় বর্মা। পাশাপাশি কানাডায় পড়তে যাওয়া ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্দেশে তাঁর সতর্কবাণী , আশেপাশে কী ঘটছে, সেই বিষয়ে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে পড়ুয়াদের।