আগরতলা, ১৩ ফেব্রুয়ারি – ভাষা বিতর্ক ইস্যুতে উত্তাল ত্রিপুরা। পরীক্ষায় রোমান হরফ চালু করার দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে সোমবার থেকে ত্রিপুরায় অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু করল আদিবাসী ছাত্র সংগঠন। শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ। প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মার মদতেই চলছে এই পথ অবরোধ। তবে আলোচনার দরজাও খোলা রেখেছেন তিনি।
হরফ বিতর্কে অনির্দিষ্টকালের জাতীয় সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ শুরু হয়েছে ত্রিপুরায়। রাজ্যের বিভিন্ন উপজাতি এলাকায় সোমবার সকাল থেকে এই অবরোধ শুরু হয়। কুমারঘাট মহকুমার ফটিকরায় থানা এলাকার ডেমডুম এবং পেঁচারথল থানা সংলগ্ন এলাকাতেও এদিন অবরোধে শামিল হয় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। পেঁচারথলের অসম-আগরতলা জাতীয় সড়কের উপর বসে পড়ে। তিপ্রামথার সভাপতি সুপর্ণা কিসার দাবি, প্রতিটি এলাকায় বন্ধের মিশ্র সাড়া পড়েছে। সকাল থেকেই বন্ধ বিভিন্ন সরকারি অফিস, জাতীয় সড়কে যান চলাচল থমকে। লোকাল থেকে দূরপাল্লার রেলও বন্ধ ।
অবরোধের জেরে সড়কের দু’ধারে প্রচুর গাড়ি আটকে পড়ে। দাবি মানা না হলে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে না বলে জানালেন নেতৃত্ব। তবে নির্দিষ্ট একটি জাতিগোষ্ঠীর স্বার্থে করা এই আন্দোলনের কারণে এদিন সমস্ত মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রদ্যোৎ কিশোর জানিয়েছেন শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন চলবে।
উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের স্থানীয় ভাষা ককবরকের নিজস্ব লিপি নেই। রোমান অথবা বাংলা লিপিতে এই ভাষা লেখা হয়। সম্প্রতি ত্রিপুরার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একটি নির্দেশিকা জারি করে। তাতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বাংলা হরফেই ককবরক লেখা বাধ্যতামূলক। রোমান হরফ চলবে না। এরই প্রতিবাদে এদিন বিক্ষোভে শামিল হয় তিপ্রা মথার ছাত্র সংগঠন তিপ্রা ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফেডারেশন। ছাত্র বিক্ষোভের জেরে পর্ষদের নির্দেশিকা বাতিল করে রাজ্য সরকার। ক্যাবিনেট বৈঠকের পর রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, পরীক্ষায় রোমান অথবা বাংলা যেকোন হরফেই ককবরক লেখা যাবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসার পর দিল্লি থেকে তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মা বলেন, ” সরকারের এই সিদ্ধান্ত আসলে তিপ্রাসা ছাত্রছাত্রীদের জয়।”