ভোপাল, ১৭ ফেব্রুয়ারি – এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মধ্যপ্রদেশের মোরেনায়। দোষীদের কঠিন শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন মহিলার পরিবার ও স্থানীয়রা। শনিবার এ নিয়ে তোলপাড় রাজনীতির ময়দান। বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যে এই ঘটনার নিন্দা করে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পোস্টে লেখেন, ‘‘এখন কী বলবে বিজেপি ? তাদের তথ্যানুসন্ধানী দল ঘটনাস্থলে যাবে ? সিবিআই তদন্ত হাতে নেবে না ? ঘটনার সঙ্গে যুক্ত অপরাধী এবং তাঁদের রাজনৈতিক কর্তারা কি গ্রেফতার হবেন ? ঘটনাস্থলে কি বিরোধীরা যেতে পারবেন ? মহিলা কমিশন সক্রিয় হবে কি ? ’’ সোশাল মিডিয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
সন্দেশখালি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা দেশে। সেখানে শাসক দলের কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তের পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। তারই মধ্যে মধ্যপ্রদেশের এই ভয়ঙ্কর ঘটনার খবর সামনে আসে। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ৩৪ বছরের অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলাকে ধর্ষণ তিন জন মিলে ধর্ষণ করে। এর পর নির্যাতিতার গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়ে তাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। ভয়ানকভাবে পুড়ে যায় নির্যাতিতার শরীরের ৮০ শতাংশ। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে এখন পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে আম্বা টাউন থেকে ৩ কিলোমিটার দূরের চান্দ কা পুরা গ্রামে। ৩৪ বছরের মহিলাকে গ্রামের তিন জন পুরুষ ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। প্রমাণ লোপাটে মহিলাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেন তাঁরা। গোটা ষড়যন্ত্রে এক মহিলাও যুক্ত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে গোয়ালিয়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। মহিলার শরীরের আশি শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানায়, ওই নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধে এক মহিলা ধর্ষণের অভিযোগ আনেন। ওই মহিলার সঙ্গে ‘বোঝাপড়া’ করতে গিয়েছিলেন নির্যাতিতা। কিন্তু ওই মহিলার বাড়িতে থাকা তিন জন নির্যাতিতা মহিলাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। নির্যাতিতাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার সময় তাঁর একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিও নিয়ে নির্যাতিতার স্বামী পুলিশের দ্বারস্থ হন। ধর্ষণে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি বর্তমানে জামিনে মুক্ত। তাঁর অভিযোগ, স্ত্রীকে ধর্ষণের পর খুনের চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের অনুমান, ধর্ষণের ‘বদলা’ ধর্ষণ-এর ঘটনা ঘটেছে।
ওই ঘটনার কথা তুলে ধরে বিজেপিকে নিশানা করেছে তৃণমূল। দলের এক্স হ্যান্ডল থেকে একটি পোস্টে লেখা হয়, ‘‘বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা যখন নয়াদিল্লিতে দলের জাতীয় কনভেনশনে ব্যস্ত তখন, ‘ডবল ইঞ্জিন সরকারের’ রাজত্ব মধ্যপ্রদেশে বাঁচার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে এক অন্তঃসত্ত্বাকে। তাঁকে ধর্ষণের পর জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছে।’’ শেষে লেখা হয়, ‘‘এ বার কি সেখানে জাতীয় মহিলা কমিশনকে পাঠানো হবে? না কি ‘মোদি কি গ্যারান্টি’ রাজ্যে এই অপরাধ হয়েছে বলে নীরবতা পালন করা হবে ?”