কেরালায় বিধানসভা ভোট ২০২৬-এ। কিন্তু এই বছর থেকেই উদ্যমের সঙ্গে তার প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনীতির অঙ্গনে মমতার দীর্ঘ লড়াই, তাঁর সাফল্য, জনপ্রিয়তা তুলে ধরতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলকে দক্ষিণের রাজ্যে পৌঁছে দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন নেতানেত্রীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসকে যে বিলীন করে দিয়েছেন সেই বার্তা মালাবার উপকূলে পৌঁছে দিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন।
ঐতিহ্যগতভাবে কেরালা বাম–কংগ্রেস প্রভাবিত। সেখানে জোড়াফুল ফোটাতে তৃণমূলের তরফে উদ্যোগ শুরু হয়েছে জোর কদমে। কেরালার মালাপ্পুরমের মানজেরি শহরে রবিবার তৃণমূলের প্রথম কর্মী সভা হয়। সেই সভায় ডেরেক বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে এখন সিপিএমের বিধায়ক সংখ্যা কত জানেন ? শূন্য। কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা কত জানেন ? শূন্য।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্ট ও কংগ্রেসকে শূন্য করে দিয়েছেন বলে বার্তা দিয়েছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। মমতার রাজনৈতিক লড়াই এবং তাঁর জনপ্রিয়তা কেরালার মানুষকে বোঝাতেই বাংলায় বাম–কংগ্রেসের শূন্য হয়ে যাওয়ার উদাহরণ দিয়েছেন ডেরেক।
ডেরেক আরও উল্লেখ করেছেন, যেখানেই বিজেপি বনাম কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াই হয়েছে, সেখানেই কংগ্রেস পরাজিত হয়েছে। আবার যেখানে বিজেপি বনাম তৃণমূলের লড়াই হয়েছে, সেখানেও তৃণমূলই জয়ী হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা।
মালাপ্পুরমের মানজেরি শহরে রবিবার তৃণমূলের প্রথম এই কর্মী সভায় মালাপ্পুরম জেলা থেকেই বেশি সংখ্যক প্রতিনিধি ছিলেন। তৃণমূল গঠনের প্রেক্ষাপট, তৃণমূল শব্দের অর্থ, তৃণমূলের প্রতীকের অর্থ, তৃণমূলের সাংগঠনিক কাঠামো – এমনই বহু বিষয় এ দিনের কর্মিসভায় তুলে ধরেন ডেরেক। দ্রুত সেখানে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রথম কেরালায় সাংসদ পেয়েছে। এই গেরুয়া শিবিরকে একমাত্র তৃণমূলই হারাতে পারে বলে ডেরেকের বক্তব্য। এই কর্মী সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। কেরালায় বন্য জন্তুর আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে পিনারাই বিজয়ন সরকার ব্যর্থ হয়েছে। মালাবার উপকূলে বন্য জন্তুর সঙ্গে মানুষের সংঘাতের বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করার আশ্বাস দিয়েছেন মহুয়া।
তৃণমূলের এই সভায় ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লিগের দুই বিধায়ক ইউএ লতিফ এবং এন সামসুদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।এলডিএফের প্রাক্তন বিধায়ক পিভি আনওয়ারকে দক্ষিণের ওই রাজ্যে তৃণমূলের আহ্বায়ক করা হয়েছে।
শনিবারও মালাপ্পুরমে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লিগের শীর্ষ নেতা সৈয়দ সাদিক আলি সাহিব থঙ্গলের সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ও সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এটি কেরালার একটি রাজনৈতিক সংগঠন এবং দল হিসেবে ভারতের নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। আইইউএমএল নেতৃত্বের সঙ্গে কী কথা হয়েছে তা নিয়ে তৃণমূলের দুই সাংসদ কিছু না বললেও কেরালা তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘ডেরেক ও’ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্র সৈয়দ সাদিক আলি সাহিব থঙ্গলের সঙ্গে দেখা করেছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় এই পরিবারের অবদানের কথা তুলে ধরেছেন। কেরালায় উন্নয়নের সম্ভবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।রাজ্যের বিভিন্ন ইস্যুকে জাতীয় স্তরে তুলে ধরার বিষয়েও কথা হয়েছে।’