• facebook
  • twitter
Tuesday, 25 March, 2025

ডিএমকে’র ডাকা বৈঠকে নেই তৃণমূল

২৫ বছর আসন পুনর্বিন্যাস স্থগিত রাখার দাবি স্ট্যালিনের

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের ডাকা বৈঠকে গরহাজির তৃণমূল। আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে এই বৈঠকে তৃণমূলকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে দেশের প্রায় সব বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা এলেও জোড়া ফুল শিবিরের কাউকে দেখা যায় নি। আর দলের সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো লন্ডন সফরে রওনা হয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তৃণমূলের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির নেতা বা সাংসদকেও কেন স্ট্যালিনের বৈঠকে দেখা গেল না?

স্ট্যালিন এ বিষয়ে যৌথ অ্যাকশন কমিটি তৈরি করেছে। শনিবার চেন্নাইয়ে তার প্রথম বৈঠক হয়। শনিবার স্ট্যালিন বলেছেন, ‘এটি শুধুমাত্র বৈঠক নয়, বরং একটি আন্দোলনের সূচনা, যা দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আমরা একসঙ্গে এই ন্যায্য পুনর্বিন্যাসের লক্ষ্য পূরণ করব।’

শনিবার বৈঠকে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস আরও ২৫ বছরের জন্য স্থগিত রাখার দাবি তুলেছেন স্ট্যালিনরা। এদিন চেন্নাইয়ের বৈঠকে চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং এক রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছে। যৌথ কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়, দেশে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের যে লক্ষ্যমাত্রা, তাতে এখনও পর্যন্ত পৌঁছনো যায়নি। এই পরিস্থিতিতে আসন পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত আরও ২৫ বছরের জন্য স্থগিত রাখা হোক। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, “যে সমস্ত রাজ্য জন্মহার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফল ভাবে রূপায়িত করতে পেরেছে, তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত নয়।”

প্রসঙ্গত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের ডাকে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে আসন পুনর্বিন্যাসের দাবিতে ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র বৈঠকে চেন্নাইয়ে হাজির হয়েছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন, তেলঙ্গানার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি, পঞ্জাবের আপ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। এছাড়া কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমারও উপস্থিত ছিলেন।

আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে সংসদে ডিএমকে প্রতিবাদ ও কক্ষত্যাগ করলেও তৃণমূল তাতে যোগ দেয়নি। প্রসঙ্গত, নতুন জনগণনা করে লোকসভার আসন পুনর্বিন্যাস হলে তামিলনাড়ু-সহ দক্ষিণের রাজ্যগুলির লোকসভা আসন উত্তর ভারতের রাজ্যগুলির তুলনায় অনেকটা কমে যাবে। সেজন্য বিষয়টি নিয়ে স্ট্যালিনের নেতৃত্বে সরব হয়েছেন ডিএমকে।

তবে শুধু দক্ষিণ ভারত নয়, পুনর্বিন্যাস হলে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশারও আসন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্য তৃণমূল শিবিরের যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, অসম, এমনকি তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে বিধানসভা ভোট আসন্ন। সেই সঙ্গে আসন পুনর্বিন্যাসের কোনও সম্পর্ক নেই। আর তাছাড়া বিধানসভা ভোটের আগে আসন পুনর্বিন্যাস হচ্ছেও না। তার পরিবর্তে ভোটার তালিকায় কারচুপি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তা ছাড়া, তৃণমূল ডিএমকের জোট শরিক নয়। স্ট্যালিনের ডাকে যোগ দেওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।

এদিকে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে মন্তব্য না করলেও ডিএমকে-র বিরুদ্ধে নাম না করে ভাষা নিয়ে বিভাজনের বিষ ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘মোদী সরকারের সরকারি ভাষা দপ্তর সব ভাষার ব্যবহার ও অনুবাদ বাড়াতে ভারতীয় ভাষা বিভাগ তৈরি করেছে। ডিসেম্বরের পর থেকে আমি মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, অন্য মন্ত্রীদের তাঁদের ভাষায় চিঠি লিখব।’

বিজেপির অভিযোগ, আগামী বছর তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ডিএমকে প্রধান স্ট্যালিন নিজের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতে আসন পুনর্বিন্যাস নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁরা উত্তর ভারতকে অপমান করছেন। শাহ আজ বলেন, ‘ভাষার নামে যাঁরা বিভাজনের রাজনীতি করছেন, তাঁরা নিজের দুর্নীতি ঢাকার চেষ্টা করছেন। আমি দক্ষিণ ভারতীয় ভাষার বিরোধিতা করছি না। তবে তামিলনাড়ু সরকার তামিল ভাষায় মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো পাঠ্যক্রম কিন্তু চালু করেনি। তামিলনাড়ুতে এনডিএ সরকার এলে তা করে দেখাবে।’

জবাবে আবার স্ট্যালিন পাল্টা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুতে ‘হিন্দি’ ভাষা চাপিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ তুলেছেন।

News Hub