সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর , জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে নীচের জলাশয়ে পড়েছিলেন ওই পরিবারের সাত জনই। দু’জন উঠে আসতে পারলেও বাকিদের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় লোনাভালায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। গত সপ্তাহে রাজধানী দিল্লি জলমগ্ন হয়ে পড়ে । লাদাখে জলের তোড়ে যুদ্ধট্যাঙ্ক সহ ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয় ৫ জন সেনার। সোমবার আবহাওয়া দফতর হিমবাহ গলতে শুরু করায় বাসিন্দাদের আচমকা হড়পা বান সম্পর্কে সতর্কবার্তা জারি করেছে।
অন্যদিকে, বর্ষার বৃষ্টিতে সিকিম, অসম, অরুণাচল প্রদেশ সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অসমের বিখ্যাত পর্যটনস্থল কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান প্লাবিত। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের ফিল্ড ডিরেক্টর সোনালি ঘোষ জানান, জঙ্গলে আগোরাটোলি রেঞ্জের ২২টি জঙ্গল ক্যাম্প, কাজিরাঙা রেঞ্জের ১০টি, বাগোরির ৮টি, বুড়াপাহাড়ের ৫টি এরকম ৬১টি পর্যটকদের আবাসস্থল প্লাবিত হয়েছে। বন্য পশুদের নিরাপত্তা ও উঁচু এলাকায় নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। জঙ্গলের পাশ দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কে যান চলাচলের গতি বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনও বন্যপ্রাণ হঠাৎ করে রাস্তায় উঠে এলে বিপদ না ঘটে। ব্রহ্মপুত্রের জল উত্তরোত্তর বাড়ছে। কাজিরাঙা এবং বাঘ সংরক্ষিত অঞ্চলের ২৩৩টি পর্যটন আবাসের মধ্যে ৬১টিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ।
অতি বর্ষণের ফলে উত্তরাখণ্ড, গুজরাতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন । উত্তরাখণ্ডের দেরাদুন-মুসৌরি হাইওয়ে কিং ক্রেগের কাছে বন্ধ রবিবার থেকেই । রাস্তায় যান চলাচল স্তব্ধ। হরিদ্বারের পরিস্থিতিও তথৈবচ। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির কারণে উত্তরাখণ্ডের পর্যটনকেন্দ্র বাগেশ্বর, নৈনিতাল, রুদ্রপ্রয়াগ এবং চামোলিতে ধসের আশঙ্কা রয়েছে বোপলী সতর্ক করেছে প্রশাসন। আগামী তিনদিন ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে দেরাদুন, পাউরি, হরিদ্বার, নৈনিতাল, চম্পাবত, উধম সিং নগরে।
গুজরাটে বেশ কয়েকটি শহর, যেমন সুরাত ও আমেদাবাদ জলমগ্ন। আমেদাবাদে বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে জল। কোথাও রাস্তার উপর দিয়ে জল বইছে, কোথাও রাস্তার উপরে সমুদ্রের জল এসে পড়েছে। আগামী চারদিন আরও বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। মহারাষ্ট্রেও ব্যাপক বৃষ্টি চলছে। বিশেষত সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বহু জায়গায় জল জমে রয়েছে।
রবিবার রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ৪৪ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিল। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা আনুমানিক ২ লক্ষ ৬২ হাজার মানুষ। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ৭৬০ শিশুও রয়েছে। বন্যার জলে প্রায় ৬৫৪৬ হেক্টর কৃষিজমি ডুবে রয়েছে।
একই অবস্থা পর্যটন রাজ্য সিকিমেরও। ধসে বেশ কয়েকটি জাতীয় সড়কসহ বিভিন্ন শহরে সংযোগকারী রাস্তায় যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছে। আবহাওয়া দফতরে পূর্বাভাস হল ১-৫ জুলাই পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ, সিকিমের হিমালয় পাদদেশ এলাকা সহ অরুণাচল, অসম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মণিপুর এবং ত্রিপুরায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে।