• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ছেন তৃণমূলের জহর সরকার

আরজি কর কাণ্ডের জের, রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ছেন তৃণমূলের সদস্য জহর সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে সাংসদ পদ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন জহরবাবু।

আরজি কর কাণ্ডের জের, রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ছেন তৃণমূলের সদস্য জহর সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে সাংসদ পদ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন জহরবাবু। দু-পাতার চিঠিতে জহরবাবু জানিয়েছেন, তিনি রাজ্যসভা সাংসদ পদ ছাড়ার পাশাপাশি রাজনীতিও ছাড়তে চলেছেন।

চিঠিতে জহর সরকার লিখেছেন, আমি আমার দায়িত্ব পালন করলাম কিন্তু আমার রাজ্যে দুর্নীতি আর দলের একাংশের নেতাদের অন্যায় দাপট দেখে আমি হতাশাগ্রস্ত হলাম। দেখলাম সরকার সামলাতে পারছে না।…এই মুহূর্তে রাজ্যের সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন ও রাগের বহিঃপ্রকাশ আমরা সবাই দেখি, এর মূল কারণ কয়েকজন কতিপয় পছন্দের আমলা ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পেশিশক্তির আস্ফালন। আমার এত বছরের জীবনে এমন ক্ষোভ এবং সরকারের প্রতি সম্পূর্ণ অনাস্থা আগে কখনও দেখিনি।’

চিঠিতে জহরবাবু আন্দোলনকে সমর্থনও জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার বিশ্বাস, এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবে না। এঁরা কেউ রাজনীতি পছন্দ করেন না। শুধু একবাক্য বিচার ও শাস্তির দাবি তুলেছেন।’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জহরবাবুর বার্তা, ‘আমি গত এক মাস ধৈর্য ধরে আরজি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি, আপনি কেন সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এককথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।’

জহর সরকারের সাংসদ পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য দৈনিক স্টেটসম্যানকে বলেন, ‘জহর সরকারের মত একজন ব্যক্তিত্ব, যিনি নরেন্দ্র মোদীর কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে রাজনীতিতে ল্যাটারাল এন্ট্রি করান। রাজ্যসভার সাংসদ করেন। জহর সরকারের মতো একজন ব্যক্তি, সংসদে থাকলে সংসদেরই গরিমা বৃদ্ধি পেত। জহর সরকারের এই পদত্যাগ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার্তা দিল, চলে যাও।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন, সেই সময় জহর সরকার দিল্লিতে সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব ছিলেন। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রসার ভারতীর সিইও পদেও ছিলেন প্রাক্তন আইএএস জহর সরকার। ২০২১ সালে ২ অগস্ট তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন জহরবাবু।

মমতার সঙ্গে জহরবাবুর পরিচয় অনেকদিনের। সরকারি চাকরিতে থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নাম ধরে ডাকতেন এবং তুই বলে সম্বােধন করতেন। আর আজ, রবিবার সেই মমতাকে চিঠি লিখেই রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রাক্তন এই আমলা।

২০২১ সালে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর জহর সরকার বলেছিলেন, মােদী সরকারের মুখােশ খুলে দেওয়াটাই প্রধান লক্ষ্য। দেশ সেভাবে চলছে না, যেভাবে চলা উচিত। দেশের সংসদে গিয়ে আমি সেই কথাটাই বলতে চাই।