বুথভিত্তিক ভোটার সংখ্যা প্রকাশের আইনি বাধ্যকতা নেই, সুপ্রিম কোর্টে জানাল নির্বাচন কমিশন

দিল্লি, ২৩ মে – ভোটার টার্ন আউট অর্থাৎ কোন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কত ভোট পড়েছে, সেই তথ্য নির্বাচনে প্রার্থী বা তার এজেন্ট ছাড়া অন্য কাউকে জানানোর কোনও আইনি নির্দেশ নেই।ভোটের হার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া এক মামলায় শীর্ষ আদালতকে একথা জানায় নির্বাচন কমিশন।  কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কত ভোট পড়েছে, সেই সংখ্যা প্রকাশ করারও কোনও আইনি সংস্থা নেই। সুপ্রিম কোর্টে এ কথা স্পষ্ট জানাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। চলতি লোকসভা নির্বাচনের চারটি দফা ভোট হওয়ার পর শতাংশের হিসেব দিলেও তার সংখ্যা প্রকাশ করেনি নির্বাচন কমিশন। 

প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র কত ভোট পড়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য সম্বলিত ফর্ম ১৭সি ভোট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রাটিক রিফর্ম বা এডিআর। এই মামলায় গত ১৭ মে কমিশনকে নোটিস পাঠায় শীর্ষ আদালত। জানতে চাওয়া হয়, কেন নির্বাচন কমিশন ভোটার টার্নআউট বা কত ভোট পড়েছে, সেই তথ্য জানাতে পারছে না।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ভোট গ্রহণের পর শুধুমাত্র প্রার্থী এবং তার এজেন্টকেই কত ভোট পড়েছে, সেই তথ্য সম্বলিত ফর্ম ১৭সি  দেওয়ার আইনি বিধান রয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নির্বাচনের মাঝে সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে। নির্বাচন কমিশন স্বেচ্ছায় ভোটার টার্ন আউট বা ভোটের সংখ্যা অ্যাপ, ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন প্রেস রিলিজের মাধ্যমে জানায়। বুধবার কমিশনের তরফে ২২৫ পাতার হলফনামা জমা দেওয়া হয়।  


নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী মনিন্দর সিং ও আইনজীবী অমিত শর্মা জানিয়েছেন, ভোট গ্রহণের দিন নির্বাচন কমিশনের তরফে ২ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রাপ্ত ভোটের তথ্য জানায়। নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্যই এই উদ্যোগ। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম, টেলিভশন মাধ্যম তাদের নিজস্ব সমীক্ষা ও তথ্যের ভিত্তিতে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বা হার প্রকাশ করছে, যা অনেক সময় কমিশনের দেখানো সংখ্যার তুলনায় বেশি হয়। গণনার আগেই ফর্ম ১৭সি প্রকাশ্যে এলে অনেক তথ্য বিকৃত হওয়া এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলে হলফনামায় জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

প্রসঙ্গত, এডিআর নামক এই এনজিও-র তরফে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে বলা হয়েছিল, নির্বাচন কমিশন ভোটার টার্ন আউটের তথ্য সঠিকভাবে জানাচ্ছে না। প্রাথমিক ভাবে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে   পরে ভোটের হারে অনেক পার্থক্য থাকছে। ভোটের সঠিক তথ্য আদৌ প্রকাশ করা হচ্ছে কি না,  ইভিএম বদলে যাচ্ছে কি না, এসব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই সংস্থা।

বুধবার নির্বাচন কমিশন হলফনামা দিতেই, এই অবস্থানের তীব্র বিরোধীতা করে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধী দলগুলি।