দিল্লির শাহিন বাগ ও জামিয়া ইসলামিয়ায় সিএএ নিয়ে বিক্ষোভের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করছে বলে অভিযােগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। তিনি এদিন পুর্ব দিল্লির কারকারডুমায় এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এসে অননুমােদিক বস্তিগুলির উন্নয়ন ও ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য গৃহ নিশ্চিত করবে। এব্যাপারে তিনি দিল্লির ৪০ লাখ বস্তিবাসীর স্বত্ব প্রদান ও অন্যান্য অনুমােদন দেওয়ার কথা জানান। যারা কখনই তাদের নিজস্ব ঘরের কথা স্বপ্নেও ভানেনি এখন তাদের স্বপ্ন পূরণে সকলেই খুশি।
তিনি অভিযােগ করেন, বর্তমান দিল্লি সরকার দেশের রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যােজনা প্রকল্প চালু করেনি। বর্তমান সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বাধা সৃষ্টি করছে। তারা আর কিছুই চায় না কেবল রাজনীতি করতে চায়। দিল্লির মানুষের ভােটও দেশের সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, এখন রাজধানী শহরের আধুনিকীকরণের জন্যও তাদের আবার ভােট দেওয়া জরুরি। এতেই সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রা নিরাপদ ও সহজ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, শুধু ঘৃণার রাজনীতি দিয়ে দেশ চলে না, উন্নয়নের নীতি গ্রহণের মাধ্যমেই সমাজের উন্নতি করতে হয়।
সাম্প্রতিক পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটে দিল্লির মানুষের চলতি সময়ের জন্য সুবিধা হবে তাই নয়, সমগ্র দশক জুড়েইএর সুবিধা পাবেন দিল্লির মানুষ। এই বাজেট দিল্লির যুবক, ব্যবসায়ী, ধম্যবিত্ত, দরিদ্র ও মহিলাদের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে তিনি দাবি করেন।
এতদিন পরােক্ষ করের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সুবিধা পেতেন, কিন্তু চলতি বাজেটে প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে সেই সুবিধা দেওয়া ব্যবস্থা হয়েছে। এজন্য কর স্তরের পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তােলেন আন্না হাজারের লােকপাল বিল নিয়ে আন্দোলনের সময়ে অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লিতে লােকপাল নিযুক্ত করার অন্যতম সমর্থক ছিলেন। কিন্তু এখন কেন কেজরিওয়ালের শাসন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেন দিল্লিতে লােকপাল নিযুক্ত হয়নি?
তিনি বলেন, সিএএ নিয়ে বিক্ষোভের পিছনে গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। শাহিন বাগ ও জামিয়ায় এই বিক্ষোভ চালানাে হচ্ছে। এরাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময় ভারতের ক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। এরাই ভারতের বিভেদকামী শক্তিগুলিকে মদত করছে। দিল্লির মানুষ কি এদের ক্ষমতায় দেখতে চান?
এক সময় দিল্লির বিভিন্ন স্থানে বােমা বিস্ফোরণের ফলে মানুষ ত্রাসের মধ্যে দিন কাটাতেন। এরাই বাটলা হাউস সংঘর্ষকে ভুয়াে বলে প্রচারের চেষ্টা করে। এরাই টুকরে টুকরে মানুষের বিক্ষোভে মদত দিচ্ছে। আমরা এখন এর বিরুদ্ধেও মানুষকে প্রতিরােধ গড়ে তুলতে দেখছি। শাহিন বাগ ও জামিয়ার মানুষ একটি আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাদের সরকারিভাবে আশ্বাস দেওয়ার পর এরা নিশ্চই তাদের বিক্ষোভ তুলে নেবেন। কিন্তু আপ ও কংগ্রেস মানুষকে ক্ষেপাচ্ছে। সংবিধান ও জাতীয় পতাকা সামনে রেখে আসল ষড়যন্ত্রকে ঢাকা দেওয়া চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মােদি অভিযােগ করেন।
দিল্লি ও বিহারের মধ্যে বাস পরিষেবা চালু না করে বিহারের মানুষকে দিল্লিতে আসতে বাধা দিচ্ছে আপ সরকার। দিল্লি-পাটনার মধ্যে বাস পরিষেবা চালুর কথা আগেই ঘােষণা করা সত্ত্বেও তা বিলম্বিত করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের উদ্দেশ্যে নাম না করে বলেন, যারা রাজনীতিতে স্বচ্ছতা আনার অঙ্গীকার করেছিলেন তাদের স্বরূপ এখন প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
সভায় ভারতীয় জনতা পার্টির দিল্লি শাখার প্রধান মনােজ তিওয়ারি একজন পূর্বাঞ্চলী ও ভােজপুরি গায়ক উপস্থিত ছিলেন। দিল্লি বিধানসভার ৭০ আসনে ৮ ফেব্রুয়ার ভােট। ভােট গণনা হবে ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিনই ফলাফল ঘােষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।