১১৪টি যুদ্ধবিমান কেনার জন্য দরপত্র ডাকতে চলেছে মোদি সরকার। দেশ তো বটেই বিশ্বের মধ্যেও এটাই বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি হতে চলেছে বলে দাবি কেন্দ্র সরকারের। যুদ্ধবিমান কেনার শেষস্তরে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
রাফায়েল চুক্তির বিতর্কে পিছনে ফেলে দেশের প্রতিরক্ষায় আধুনিকীকরণে বৃহৎ পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র। ভারতীয় সেনায় সামরিক শক্তি বাড়াতে এবং পুরনাে যুদ্ধবিমানগুলি ধাপে ধাপে বাতিল করতে চাইছে সরকার।
দ্রুত বরাত প্রক্রিয়া কার্যকর করার চেষ্টা করছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক স্পষ্ট করে পুরনাে যুদ্ধবিমান পরিবর্তনের কথা না জানালেও বায়ুসেনার চাহিদা পূরণের জন্য যে নতুন যুদ্ধ বিমান কেনার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার তা জানালেন সংসদে।
১১৪টি যুদ্ধ বিমানের চুক্তি মূল্য প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার বলে ধরা হয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় ১ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকা। সূত্রের খবর, যুদ্ধবিমান নির্মাণে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করে বেশ কয়েকটি সংস্থা চুক্তিতে সামিল হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণ সংস্থা বােয়িং, লকহিড মার্টিন কর্পোরেশন, সাব এবির মতাে সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সুত্রে খবর, নথিপত্র প্রায় তৈরি রয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে শীঘ্রই দরপত্র ডাকা হবে।
জানা গেছে, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ৮৫ শতাংশ যুদ্ধবিমান তৈরি হবে ভারতে। বােয়িংয়ের চুক্তি রয়েছে হিন্দুস্তান অ্যারােনটিক্যাল লিমিটেড এবং মহিন্দ্রা ডিফেন্সের সঙ্গে। এফ-২১ নির্মাণের জন্য লকহিডের চুক্তি রয়েছে টাটা গ্রুপের সঙ্গে। আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সাব এবির।
যৌথ উদ্যোগেই নতুন যুদ্ধবিমানগুলি তৈরি হতে চলেছে। চুক্তিতে উল্লেখ থাকবে তিন বছরের মধ্যে ভারতের হাতে প্রথম ধাপে কয়েকটি যুদ্ধবিমান তুলে দিতে হবে।
সংসদে শ্রীপদ নায়েক আরও জানিয়েছেন, বায়ুসেনার চাহিদা মেনে খুব তাড়াতাড়ি যুদ্ধবিমানগুলি আনা হবে। তারজন্য দ্রুত চুক্তি কার্যকর হবে প্রতিবেশি চিন ও পাকিস্তানের থেকে সুরক্ষা বাড়াতে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে ঢেলে সাজানাে হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সংসদে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক আরও বলেন, যুদ্ধজাহাজ, ট্যাঙ্কার সহ অন্যান্য আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র কেনার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। প্রাথমিক নথিপত্র তৈরির কাজ চলছে। সাবমেরিন কেনার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে সংস্থাগুলিকে ডাকা হচ্ছে।
দ্বিতীয় মোদি সরকারের কাছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিকরণ প্রয়ােজনীয় বলে তাতে বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে অস্ত্রভাণ্ডার বৃদ্ধির দিকেও জোর দিচ্ছে সরকার।
পুলওয়ামা হামলায় পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে টক্কর দিতে না পেরে পুরনাে মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে নামাতে হয়েছিল। বায়ুসেনায় একে ‘উড়ন্ত কফিন’ বলা হয়।
অকেজ যুদ্ধবিমানগুলি বাতিল দিয়ে আধুনিক যুদ্ধবিমান সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দ্রুত চুক্তি করার দিতে এগােচ্ছে মোদি সরকার। এটাই তারই উদাহরণ।