বৃহস্পতিবার দুপুরে ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি অখিল কুরেশির এজলাসে উঠেছিল খােয়াই থানার দায়ের করা মামলাটি। এদিন বিচারপতি এই মামলায় স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। এরফলে আইনী স্বস্তিতে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ পাঁচজন তৃণমূল নেতা। ত্রিপুরা পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেনা। পাঠানাে যাবেনা নােটিশও। পুজো পর্যন্ত করা যাবে না জিজ্ঞাসাবাদও।
আদালতের এই নির্দেশে আইনী স্বস্তি পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘােষ, দোলা সেন, ব্রাত্য বসু এবং সুবল ভৌমিক। যুব তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে ত্রিপুরার খােয়াই থানায়। কার্যত রণং দেহি মেজাজে ধরা দিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে রীতিমতাে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দাবি উঠেছিল ধৃতদের মুক্তির জন্য। এমনকী প্রতিবাদ স্বরূপ খােয়াই থানায় অবস্থানে বসে পড়েন অভিষেক-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রী। আর তার জেরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণােদিত মামলা দায়ের করে ত্রিপুরা পুলিশ।
নােটিস পাঠিয়ে তৃণমূল নেতাদের ডেকে পাঠানাে হচ্ছিল। এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। এদিন তাদের তরফে আইনজীবী ছিলেন সিদ্ধার্থ লুথরা। বিচারপতি এদিন এজলাসে মামলার শুনানিতে জানিয়েছেন, ‘খােয়াই থানা মামলায় দুর্গাপুজোর পরে পরবর্তী শুনানি ।
ততদিন পর্যন্ত তৃণমূল নেতাদের জেরা করা যাবে না। এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খােয়াই থানায় তলব করা হয় অভিষেক, কুণাল ঘােষসহ মােট পাঁচজনকে পাঠানাে হয় নােটিসও। কুণাল ঘােষ হাজিরাও দেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাকিরা হাজির জন্য সময় চাওয়া হয়। এর মাঝেই আদালতের নির্দেশে স্বস্তি পেলেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের আগস্টের গােড়ার দিকে দলীয় এক কর্মসূচিতে যােগ দিতে যাওয়ার সময় ত্রিপুরায় তৃণমূলের যুব নেতৃত্বকে রাস্তায় আটকানাে হয়। সেখানে দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা ও জয়া দত্তদের উপর হামলা চলে বলে অভিযােগ।
মাথা ফেটে যায় সুদীপ রাহার, কানে আঘাত পান জয়া দত্ত। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। কার্যত গােটা ত্রিপুরা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এরপরই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হলে খােয়াই থানায় অবস্থানে বসেছিলেন অভিষেক, কুণাল ঘােষরা। ধৃতদের মুক্তির দাবি তােলেন।
তবে জামিন অযােগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়ায় ধৃত নেতাদের তােলা হয় আদালতে। সেই সময়ও থানাতেই বসেছিলেন অভিষেক। সেখান থেকেই নজর রাখছিলেন পরিস্থিতির উপর। সেদিন থানায় তৃণমূলের অবস্থানের জেরেই এবার মামলা রুজু করে ত্রিপুরা পুলিশ আজ এই মামলায় স্থগিতাদেশ জারি করলাে ত্রিপুরা হাইকোর্ট।