ভিভিপ্যাট নিয়ে রায় স্থগিত রাখল শীর্ষ আদালত 

দিল্লি, ২৪ এপ্রিল – সমস্ত বুথে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাটের কাগজ মেলানো হবে কিনা, সে নিয়ে বুধবার কোনও রায় দিল না সুপ্রিম কোর্ট। এই নিয়ে আগেই আপত্তি জানায় নির্বাচন কমিশন।কমিশনের মতে, সমস্ত বুথে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাটের কাগজ মেলাতে হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া আবার ব্যালট পেপারের জমানায় চলে যাবে। বুধবার এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ সেই সুরেই কথা বলে। শীর্ষ আদালত জানায়, তারা নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। নির্বাচন কমিশনের মতো একটি সাংবিধানিক সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপও করতে পারে না। তবে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সুরক্ষিত করার জন্য যদি কিছু করার থাকে, তবে তা অবশ্যই করা হবে।
 
বিরোধীদের দাবি ছিল, ভোট প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে হচ্ছে কি না তো বোঝার জন্য ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাটের কাগজ মিলিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ১০০টির বেশি আর্জি জমা পড়েছিল। তার মধ্যে বিরোধী দলগুলির আর্জিও ছিল। ইভিএমে ভোট দেওয়ার পর সেই ভোট সঠিক জায়গায় পড়েছে  কি না তা প্রমাণ করে ভিভিপ্যাট। ভোট দেওয়ার সাত সেকেন্ডের মধ্যে একটি কাগজ প্রার্থীর নাম, প্রতীক-সহ বেরিয়ে আসে মেশিন থেকে। তবে সেই কাগজ প্রার্থীদের হাতে যায় না। জমা হয় একটি পাত্রে। এত দিন নিয়ম ছিল, প্রতিটি এলাকা থেকে যে কোনও পাঁচটি বুথ বেছে নিয়ে সেখানে ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপ্যাটের কাগজের হিসাব মিলিয়ে দেখার। কিন্তু বিরোধীদের দাবি ছিল, প্রতিটি বুথেই এই কাগজ এবং ইভিএমের ভোট মিলিয়ে দেখতে হবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই হিসাবে গরমিল থাকছে।

 সুপ্রিম কোর্টে প্রায় এক বছর ধরে এই মামলার শুনানি চলছিল। বুধবার সেই মামলার রায় ঘোষণা করার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টে। দুপুর ২টোর সময় মামলার শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্বাচন কমিশনের এক পদস্থ অফিসারকেও তলব করেছিল কিছু প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য।

 আদালত কমিশনকে মোট চারটি প্রশ্ন করে-

১. সমস্ত ভিভিপ্যাটেই কি মাইক্রো কন্ট্রোলার ইনস্টল করা আছে ?


২. মাইক্রো কন্ট্রোলার কি একবারই প্রোগ্রাম করা যায় ?

৩. নির্বাচন কমিশনের কাছে কত সিম্বল লোডিং ইউনিট রয়েছে ?

৪. নির্বাচনী হলফনামা জমা দেওয়ার সময় ৩০ দিন।  সমস্ত রেকর্ড  মজুত থাকে ৪৫ দিন । কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী জমা দেওয়ার সময় ৪৫ দিন। তাই রেকর্ড মজুত করার সময়ও আরও বাড়ানো উচিত।

আদালত জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে এ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যই জমা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সমস্ত জবাব পেলেও আপাতত এই মামলার রায় স্থগিত রাখা হচ্ছে। মামলাকারীদের দাবি ছিল, লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন এই সংক্রান্ত মামলার রায়দান হওয়া উচিত। এর আগে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর গত ১৮ এপ্রিল লোকসভা ভোট শুরুর আগের দিন রায়দান স্থগিত রাখে সুপ্রিম কোর্ট।  ২৪ এপ্রিল  রায় ঘোষণা করার কথা ছিল শীর্ষ আদালতের । কিন্তু বুধবার সেই রায় স্থগিত রাখা হয় ।