চণ্ডীগড়, ২০ ফেব্রুয়ারি – চণ্ডীগড়ের মেয়র নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত জয়ী হল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। আপ প্রার্থী কুলদীপ সিংহকে বিজয়ী ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে মঙ্গলবার ওই নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার অনিল মসিহকে তিরস্কার করে তাঁর বিরুদ্ধে শোকজ নোটিস জারি করার নির্দেশ দিল আদালত।
গত ৩০ জানুয়ারি ‘ভোটে জিতে’ও হারতে হয় চণ্ডীগড় পুরনিগমের আপ এবং কংগ্রেস মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী কুলদীপ সিংহকে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট কুলদীপকেই ‘বৈধ বিজয়ী’ বলে ঘোষণা করে। যে আটটি ভোট বাতিলের জন্য বিজেপির মেয়র পদপ্রার্থী মনোজ সোনকরের কাছে কুলদীপকে হারতে হয়েছিল, সেই আটটি ভোটকে মঙ্গলবারই ‘বৈধ’ বলে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এরপরই ভিডিও প্রকাশ করে আপের তরফে দাবি করা হয় ব্যালট পেপারে কারসাজি করে গণনায় কারচুপি করেছেন প্রিসাইডিং অফিসার অনিল। সোমবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ নির্দেশ দেয় মঙ্গলবারই ভোটের কাজে ব্যবহৃত সমস্ত ব্যালট পেপার আদালতে নিয়ে যেতে। একই সঙ্গে ভোটগণনার সময়ে তোলা ভিডিও ফুটেজ শীর্ষ আদালতে পেশ করতে হবে। সেই মতো সব কিছু আদালতের সামনে আনা হয়।
অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসারকে নোটিস দিয়ে কৈফিয়ত তলব করেছে আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় অনিলের উদ্দেশে বলেন, “মাননীয় মসিহা, আপনি যদি সঠিক উত্তর না দেন, তা হলে আপনি শাস্তি পাবেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমরা ভিডিয়ো দেখেছি। আপনি ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে ব্যালট পেপারের উপরে কাটাকুটি করে কী করছিলেন?
অভিযুক্ত প্রিসাইডিং অফিসার আদালতে জানান, যাতে ব্যালট পেপারগুলি মিশে না যায়, তার জন্যই তিনি দাগ দিয়ে রাখছিলেন। ভিডিয়োয় কেন তাঁকে বার বার সিসি ক্যামেরার দিকে তাকাতে দেখা গিয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “অনেক ক্যামেরা ছিল। আমি সেগুলির দিকেই তাকিয়েছিলাম।” তাঁর বক্তব্য শোনার পর শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ব্যালটগুলি পরীক্ষা করে দেখার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রবিবার সন্ধ্যায় বিজেপিতে যোগ দেন আপের তিন কাউন্সিলর। তার আগেই পদত্যাগ করেন বিজেপির মেয়র মনোজ সোনকর। চণ্ডীগড়ে মেয়র পদে কে বসবেন এবং কোন দল জয়ী হবেন সেদিকে তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল। দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে চণ্ডীগড়ের মেয়র পদ পেল আপ-কংগ্রেস জোটই।
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন কেজরিওয়াল। সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণা আসলে ইন্ডিয়া জোটের জয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এটি একটি ‘ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত’ বলেও মত প্রকাশ করেছেন তিনি।