কলকাতা, ১১ মার্চ: গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। আজ সেই নির্বাচনী বন্ড নিয়ে এসবিআই-এর বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব দেখাল সুপ্রিম কোর্ট। আজ, সোমবার এই বিষয়ে শুনানি ছিল আদালতে। সেই শুনানিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই বিষয়ে আগামীকাল, মঙ্গলবার ১২ মার্চের মধ্যে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে যাবতীয় তথ্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হাতে তুলে দিতে হবে। আদালত এসবিআইকে আরও নির্দেশ দিয়েছে, এসবিআই অবিলম্বে যেন ওই বন্ড দেওয়া বন্ধ করে।
এজন্য এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়। আদালতের কাছে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়। এসবিআই-এর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, এসবিআইয়ের কাছ থেকে যাবতীয় তথ্য পাওয়ার পর আগামী ১৫ মার্চ বিকেল পাঁচটার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ করতে হবে। এর আগেই, নির্বাচনী বন্ড প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ ফেব্রুয়ারি মাসে আসে। তখনই এই একাধিক নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন ও এসবিআইকে।
প্রসঙ্গত ২০১৯-এর ১২ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ৬ মার্চের মধ্যে আদালতের কাছে তুলে দেওয়ার কথা স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার। কিন্তু ৬ মার্চের মধ্যে তথ্যপ্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে জানায় এসবিআই। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে আইনজীবী হরিশ সালভে বলেন, তথ্য সংগ্রহের জন্য ব্যাঙ্কের আরও সময় দরকার। বিষয়টি নিয়ে সংবেদনশীলতার দিকটি তুলে ধরেন হরিশ সালভে। কারণ অনুদান প্রদারকারীর নাম ব্যাঙ্কের কিছু শাখায় সিল করা খামে রাখা থাকে। সেই জায়গা থেকে সময় চেয়ে নেওয়ার আর্জি জানান এসবিআইয়ের তরফের আইনজীবী। একথা শুনে পাল্টা কোর্ট বলেছে,’আমরা চেয়েছি এসবিআই অনুদান প্রদানকারীদের তথ্য সামনে রাখুন। আপনারা আমাদের নির্দেশ কেন পালন করছেন না?’
মামলায় সুপ্রিম কোর্টের থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত নির্বাচনী বন্ডের তথ্য প্রকাশের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি রাখে এসবিআই। এই আর্জি শুনে সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘গত ২৬ দিন কী করছিলেন? আপনাদের আবেদনে এই নিয়ে কিছু লেখা নেই। সমস্ত তথ্য সম্বলিত সিল করা খাম আপনাদের শুধু খুলতে হবে। আর তথ্য পেশ করতে হবে। ’
পাশাপাশি, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী বন্ড নিয়ে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা কেন মানা হয়নি, তার জন্য কেন আদালত অবমাননা সংক্রান্ত প্রক্রিয়া করা হবে না, সেই বিষয়ে হলফনামা দিয়ে এসবিআইকে জানাতে নির্দেশ দেয় আদালত। নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনের জমা দেওয়া হলফনামাও কমিশনকে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ।