সংরক্ষণের বিরুদ্ধে পাটনা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট

দিল্লি, ২৯ জুলাই – বিহারে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে পাটনা হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারে তফশিলি জাতি, উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণি ও  পিছিয়ে থাকা শ্রেণির জন্য চাকরিতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ বর্ধিত করার বিরুদ্ধে পাটনা হাইকোর্ট একটি নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ রাখার আর্জি সোমবার খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। বিহারে এই সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করার প্রস্তাব ছিল সংশোধিত আইনে। তবে সেই আইন বাতিল করা হয় পাটনা হাইকোর্টে। পাটনা হাইকোর্টের এই রায়ে স্থগিতাদেশ দিতে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট।

বিহারের সংরক্ষণ আইন বাতিলের সিদ্ধান্তই আপাতত বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, বিহার সরকার তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।  গত বছরের নভেম্বরে বিহারের বিধানসভায় এই সংক্রান্ত আইন পাশ হয়েছিল। ফলে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ যুক্ত করে, মোট ৭৫ শতাংশ সংরক্ষণ থাকছিল সংশোধিত আইনে। তবে চলতি বছরের ২০ জুন পাটনা হাই কোর্ট ওই আইন বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল।

হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ওই আইন সংবিধান-বিরুদ্ধ। শুধু তা-ই নয়, ওই আইন সকলের জন্য সমানাধিকারের শর্তের পরিপন্থী বলেও মন্তব্য করেছিল পাটনা হাই কোর্ট। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া ৫০ শতাংশের নির্দেশিকার কথাও উল্লেখ করেছিল হাই কোর্ট। জানানো  হয়েছিল, কোনও অবস্থাতেই ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা রাজ্য লঙ্ঘন করতে পারে না। হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিহার সরকার। তবে সেই নির্দেশের উপর  কোনও স্থগিতাদেশ দিল না শীর্ষ আদালত।ফলে সংরক্ষণ আইন বাতিলের নির্দেশ কার্যকর থাকায় সমস্যায় পড়লেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।


জাতিগত জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই বিহারে সংরক্ষণ পদ্ধতি আমূল বদলে ফেলেন নীতীশ কুমার । তফসিলি জাতি এবং উপজাতি, অনগ্রসর জাতি এবং অতি অনগ্রসর জাতির জন্য ৬৫ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাব করেন তিনি। সেই প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ হয়, যা ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্টের বেঁধে দেওয়া ৫০ শতাংশ সংরক্ষণের সীমা লঙ্ঘন করে। নীতীশ সরকারের দাবি ছিল, আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে রক্ষা করতে সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণের পরিমাণ ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাটনা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। এই সংরক্ষণকে বেআইনি বলে মন্তব্য করে গত ২০ জুন পাটনা হাইকোর্ট ওই আইন বাতিলের নির্দেশ দেয়।