• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ভোটের মাঝেই ইডির ক্ষমতা খর্ব করল সুপ্রিম কোর্ট 

দিল্লি, ১৬ মে – লোকসভা ভোটের মধ্যেই ইডির ক্ষমতায় লাগাম পরালো  সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ আদালতে বিচারাধীন ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ অর্থাৎ  পিএমএলএ মামলার ১৯ নম্বর ধারায় অভিযুক্তকে ইডি গ্রেফতার করতে পারবে না। ইডি যদি তেমন কোনও অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখতে চায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট বিশেষ আদালতে আবেদন করতে হবে।  

দিল্লি, ১৬ মে – লোকসভা ভোটের মধ্যেই ইডির ক্ষমতায় লাগাম পরালো  সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, বিশেষ আদালতে বিচারাধীন ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ অর্থাৎ  পিএমএলএ মামলার ১৯ নম্বর ধারায় অভিযুক্তকে ইডি গ্রেফতার করতে পারবে না। ইডি যদি তেমন কোনও অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখতে চায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট বিশেষ আদালতে আবেদন করতে হবে।
 
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, আর্থিক তছরুপের মামলায় বিশেষ আদালত হস্তক্ষেপ করলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না ইডি। বিশেষ আদালতে বিচারাধীনকে হেফাজতে নিতে হলে অনুমতি লাগবে। তারপর আসবে আটক বা গ্রেপ্তারির প্রশ্ন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দেয়, ‘যদি এক জন অভিযুক্ত সমনে সাড়া দিয়ে আদালতে হাজির হন, তবে তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য ইডিকে সংশ্লিষ্ট আদালতেই আবেদন করতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া হাজিরা দেওয়া অভিযুক্তকে হেফাজতে নিতে পারবে না ইডি।’ সেই সঙ্গে দুই বিচারপতির বেঞ্চের তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ— ‘‘পিএমএলএ মামলায় অভিযুক্ত যদি সমন অনুসারে বিশেষ আদালতে হাজির হয়, তাহলে তাকে হেফাজতে রাখা যাবে না। তাই তাঁর আলাদা ভাবে জামিনের আবেদন করার কোনও প্রয়োজন নেই।’’
 
এ ক্ষেত্রে পিএমএলএ-র ৪৫ নম্বর ধারার দুটি শর্ত কার্যকরী হবে না বলেও বৃহস্পতিবার জানিয়ে দেয় শীর্ষ আদালত। প্রসঙ্গত, ওই দুই শর্তের প্রথমটি হল , যখন পিএমএলএ মামলার অভিযুক্ত জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করবেন, তখন প্রথমে শুনানির জন্য সরকারি আইনজীবীর সম্মতির প্রয়োজন হয়। সরকারি আইনজীবী যদি সন্তুষ্ট হন যে, অভিযুক্ত দোষী না-ও হতে পারেন এবং মুক্তি পেলে ওই ধরণের অপরাধ করার সম্ভাবনা নেই, তখনই অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া যেতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের এই  নির্দেশের জেরে গুরুত্বহীন হয়ে গেল ইডির অতিরিক্ত ক্ষমতা।
 
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে কার্যকরী হওয়া সংশোধিত পিএমএলএ আইনে গ্রেফতারি, সমন পাঠানো, তল্লাশি, বা নগদ সম্পত্তি আটকের ক্ষেত্রে ইডির হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে, এই অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন এবং বিরোধীদের তরফে। ইডির এই ক্ষমতা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের বিরোধী বলেও অভিযোগ ওঠে। ইডি তদন্ত শুরুর আগে যে ইসিআইআর বা এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট দায়ের করে, তা গ্রেফতারির আগে দেখানো ছাড়াও বিভিন্ন দাবিতে বহু মামলা হয় শীর্ষ আদালতে। কিন্তু ২০২২ সালের ২৭ জুলাই অবসর নেওয়ার দু’দিন আগে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি খানউলকর তাঁর রায়ে জানিয়েছিলেন, ইসিআইআর দেখানোর প্রয়োজন নেই।
 
তবে ইডির অধিকাংশ ‘অতিরিক্ত ক্ষমতায়’ সিলমোহর দিলেও পরবর্তী সময়ে দু’টি ক্ষেত্র আবার পুনর্বিবেচনা করতে রাজি হয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রথমত, গ্রেফতারির আগে ইডি যে ইসিআইআর দায়ের করে, সেটি দেখাতে তারা বাধ্য নয় বলে ঘোষিত রায়। দ্বিতীয়ত, পিএমএলএ-তে অভিযুক্তের উপরেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের যে দায় বর্তায়, সেই বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করা হবে। সেই মামলা এখন শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন। তারই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট গ্রেফতারি নিয়ে ইডির বাড়তি ক্ষমতা খর্ব করল ।