দিল্লি, ১ আগস্ট – সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক রায় দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরিতে তফশিলি জাতি-জনজাতিদের মধ্যে একাংশকে চিহ্নিত করে আলাদা করে সংরক্ষণের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে । অর্থাৎ এবার থেকে তফশিলি জাতি ও তফশিলি উপজাতির মধ্যে শ্রেণিকরণে রাজ্যগুলিকে অনুমতি দিল সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং চাকরিতে রাজ্যগুলি তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের মধ্যে উপশ্রেণি চিহ্নিতকরণ এবং বিশেষ সংরক্ষণে বিশেষ্ সুবিধে দেওয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারের। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, ‘‘উপশ্রেণি চিহ্নিতকরণের বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সমতার নীতি লঙ্ঘন করছে না।’’ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের ছয় বিচারপতি এতে সায় দিলেও ভিন্ন মত প্রকাশ করেন বিচারপতি বেলা ত্রিবেদী। তাঁর মতে, তফশিলি জাতি উপজাতিদের মধ্যে অতি পিছিয়ে পড়া অংশকে চিহ্নিত করে কোটার মধ্যে কোটা র সুবিধে দেওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হল। তবে, সেক্ষেত্রে সার্বিক যে সংরক্ষণের মাত্রা সেটা পরিবর্তন করা যাবে না।
২০০৫ সালে শীর্ষ আদালত এক রায়ে বলেছিল, ‘‘তফশিলি জাতি-জনজাতির মধ্যে শ্রেণিকরণের এক্তিয়ার কোনও রাজ্য সরকারের নেই।’’ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ সেই রায় খারিজ করে দিয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও এসসি-এসটিদের মধ্যে তুলনামূলক ভাবে পিছিয়ে পড়া অংশকে আলাদা ভাবে চিহ্নিত করে বিশেষ সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, তফশিলি জাতি-জনজাতি এমনকি, ওবিসিদের মধ্যে ‘অতি পিছিয়ে পড়া অংশ’কে চিহ্নিত করে তাঁদের জন্য এসসি-এসটি কোটার মধ্যেই পৃথক সংরক্ষণের ব্যবস্থা চালু রয়েছে কয়েকটি রাজ্যে। বিহারে দেড় দশকেরও বেশি সময় আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকার ওবিসি এবং দলিতদের মধ্যে তুলনামূলক ভাবে বেশি পিছিয়ে পড়া অংশ ‘অতি অনগ্রসর’ এবং ‘মহাদলিত’ হিসাবে চিহ্নিত করে পৃথক সংরক্ষণের সুবিধের ব্যবস্থা করেছিল।
দেশে সামাজিক সমতা আনার পক্ষে এই রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ।