সংসদে ‘শব্দ’ ফতোয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার বিতর্ক চরমে ওঠে। জানা যায়, তালিকায় রয়েছে ‘লজ্জাজ্জনক’, ‘নির্যাতন’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘নাটক’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’, ‘ভণ্ডামি’, ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’ ‘স্বৈরাচারী’, ‘খালিস্তানি’, ‘বিনাশ পুরুষ’, ‘জয়চাঁদ’, তানাশহি’, ‘দাঙ্গা’, ‘দালাল’, ‘দাদাগিরি’, ‘খুন সে ক্ষেতি’, ‘দোহরা চরিত্র’, ‘জুমলাবাজি’, ‘কোভিড স্প্রেডার’, ‘স্নুপগেট’ প্রভৃতি শব্দ।
এই নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বাড়তে থাকে। তীব্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় বিরোধীদের তরফে। সাংসদদের মুখে লাগাম পরানো হচ্ছে এমনই প্রতিক্রিয়া দেন বিরোধী দলের শীর্ষ নেতানেত্রীরা
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপা্যায় বলেন, ‘এই ঘটনা একনায়কতন্ত্রের চূড়ান্ত।’ যদিও শেষ পর্যন্ত জানা যায়, কোনও শব্দকেই নিষিদ্ধ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অসংসদীয় শব্দের একটি তালিকা ঘিরে রীতিমতো বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে এই শব্দগুলির প্রয়োগ সংসদ কক্ষে নিষিদ্ধ হচ্ছে। এই নিয়ে তোলপাড় হয় জাতীয় রাজনীতি।
যদিও আগামী ১৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া সংসদের বাদল অধিবেশনে এই শব্দগুলি নিষিদ্ধ হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে দিনভর বিতর্কের পর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এই নিয়ে তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, কক্ষে নিজেদের মতামত জানানোর পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। কোনও শব্দই নিষিদ্ধ করা হয়নি সংসদে।
এই প্রসঙ্গে ওম বিড়লা জানিয়েছেন, ‘১৯৫৯ সাল থেকেই এটা হয়ে আসছে। কোনও শব্দই নিষিদ্ধ করা হয়নি।
সদস্যরা স্বাধীনভাবে তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। এই অধিকার তাঁদের থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সংসদের ঐতিহ্যই তাই।’
ওম বিড়লার কথায়, ‘ আগেও এমন বই প্রকাশিত হত, সেখানে অসংসদীয় শব্দের তালিকা থাকত।
কিন্তু এবার কাগজ বাঁচাতে আমরা সেটা ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছিলাম। কোনও শব্দই নিষিদ্ধ হয়নি।
আমরা কেবল সেই শব্দগুলিকে একত্র করেছি, যেগুলি মুছে ফেলা হয়েছে। সংসদের সদস্যদের আপত্তিতেই ওই শব্দগুলি রেকর্ড থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে।
এবং এই শব্দগুলি কেবল বিরোধী সাংসদরাই ব্যবহার করেছেন তা নয়, কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা সরকারের প্রতিনিধিরাও ব্যবহার করেন।’
তবে শেষ পর্যন্ত লোকসভার অধ্যক্ষ এই বিতর্কের অবসান ঘটাতে এগিয়ে এলেও লোকসভার বাদল অধিবেশনে এই শব্দগুলির প্রয়োগকে ঘিরে যে কৌতূহল থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।