ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর মােকাবিলায় প্রস্তুতি পর্ব খতিয়ে দেখার জন্য রব্বিার একটি বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদী। বৈঠকে এনডিএম এ, টেলিকম, বিদ্যুৎ, অসামরিক বিমান পরিবহণ এবং ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের শীর্ষ স্তরের আধিকারিকরা হাজির ছিলেন। এই বিপর্যয় মােকাবিলার জন্য কী কী প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে, তা সবিস্তারে পর্যালােচনা করা হয়।
যত দ্রুত সম্ভব মানুষের কাছে গিয়ে ঝড় সম্পর্কে সতর্কবার্তা দেওয়া, বিপর্যয়ে দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানাে, সময়মতাে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ বিপর্যয় রােখার মতাে বেশ কয়েক দফা পদক্ষেপের কথা উঠে এসেছে এই বৈঠকে।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, আর কী কী করা উচিত নয় তা সেই বার্তা সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিপর্যয় মােকাবিলা বাহিনীকে মােতায়েন করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায়। প্রস্তুত রাখা হয়েছে উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং নৌবাহিনী।
ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌরা শনিবারই ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির সঙ্গে ইয়াস-এর মােকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। ওড়িশার তিন জেলায় ইয়াসের ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। এই জেলাগুলি হল ময়ূরভঞ্জ, ভদ্রক, বালেশ্বর। রবিবার একথা জানিয়েছেন ওড়িশার মৌসম ভবনের সহ অধিকর্তা উমাশংকর দাস।
একটি সংবাদ সংস্থাকে তিনি রবিবার বলেন, ‘আশা করছি পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্টি হওয়া এই নিম্নচাপটি আগামী বারাে ঘন্টার মধ্যে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ২৬ মে সেটি ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলে প্রবেশ করবে। ‘উত্তর ওড়িশার কয়েকটি জেলায় কয়েকটি ঝড়ের তীব্র প্রকোপ পড়ার সম্ভাবনা।
২৫ মে থেকে ভদ্রক, বালেশ্বর, জয়পুর, কেন্দাপাড়া, জগৎসিংপুর, কটক, খুরদা, পুরী, এই সব জেলাগুলিতে ভারি বৃষ্টি হবে। ময়ূরভঞ্জ এবং বালেশ্বরে ২৬ মে অতি ভারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর। তার আগে জাতীয় বিপর্যয় মােকাবিলা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিব রাজীব গৌরা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মৌসম ভবনের ডিরেক্টর জেনারেল ও অন্য আধিকারিকরা। বিপর্যয়ের আগেই উপকূলের নিচু এলাকাগুলি থেকে মানুষকে বার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। খাবার, জল, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়ােজনীয় জিনিসের যাতে অভাব না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে কমিটিকে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, জাতীয় বিপর্যয় মােকাবিলা বাহিনীর ৬৫ টি দলকে মােতায়েন করা হয়েছে এই দুই রাজ্যে। এ ছাড়া আরও ২০ টি দল তৈরি রয়েছে। প্রয়ােজন পড়লে তাদের কাজে নামানাে হবে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষী বাহিনীকেও তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়ােজন পড়লে তারাও উদ্ধার কাজ ও অন্যান্য সাহায্যে নেমে পড়বে।
জানানাে হয়েছে, এই মুহূর্তে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপ ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে। নিম্নচাপের গতি প্রকৃতির দিকে নজর রেখেছে নৌবাহিনী। এইচএডিআর এর আওতায় নৌবাহিনীর ৪ টি জাহাজকে তৈরি রাখা হয়েছে।
পশিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে যেখানে ক্ষয়ক্ষতি হবে সেখানে ত্রাণ ও অন্য সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছে যাবে এই জাহাজগুলি। এ ছাড়া বিশাখাপত্তনমে আইএনএস ডেগা ও চেন্নাইয়ে আইএনএস রজলিকে তৈরি রাখা হয়েছে। প্রয়ােজন পড়লে নৌবাহিনীর বিমানে করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে আনার কাজ করা হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।