দিল্লি, ১ আগস্ট – নতুন সংসদ ভবন তৈরি করা হয়েছে ১২০০ কোটি খরচ করে । অথচ বছর না ঘুরতেই বেহাল দশা। ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জল। নীচে বালতি রেখে কোনও মতে সামাল দেওয়া হচ্ছে পরিস্থিতি। সংসদ ভবনের লবিতেও জমে জল। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মণিকম ঠাকুর সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, সংসদের লবিতে ছাদ থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জল। মেঝেতেও সর্বত্র জল থইথই। পরিস্থিতি সামাল দিতে কোনও মতে বালতি দিয়ে সেই জল ধরে রাখা হচ্ছে।
ভিডিয়োটি পোস্ট করে মণিকম নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘সংসদের যে লবি রাষ্ট্রপতি ব্যবহার করেন, সেখানে এমন জল চুঁইয়ে পড়ার দৃশ্য নয়া সংসদ ভবনের হাল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।’’ সেই সঙ্গে নিট দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে এনে জুড়ে দিয়েছেন কটাক্ষ। লিখেছেন, ‘‘বাইরে পেপার লিকেজ, ভিতরে ওয়াটার লিকেজ!’’ প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগে সদ্যনির্মিত রামমন্দিরের ছাদ থেকেও জল চুঁইয়ে পড়ার দৃশ্য প্রকাশ্যে এসেছিল। পর পর এমন ঘটনাতে বিরোধীদের দাবি, করদাতা সাধারণ মানুষের টাকায় ছেলেখেলা চলছে।
নয়া সংসদের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। বৃহস্পতিবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে মহুয়া লিখেছেন, ‘‘এই নতুন সংসদ ভবন ছিল নরেন্দ্র মোদীর অহংকার! সেই অহংকারের আসন যে ২০২৪ লোকসভা ভোটের পর টলে গেছে, এ বার সেটাই আস্তে আস্তে স্পষ্ট হচ্ছে।’’ সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের গলাতেও ব্যঙ্গের সুর। তাঁর দাবি, এর চেয়ে বর্ষাকালীন অধিবেশনের বাকিটা পুরনো সংসদ ভবনেই স্থানান্তর করা হোক. মণিকমের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই অখিলেশের টুইট, ‘‘এর চেয়ে পুরনো সংসদই ভাল ছিল। কারণ, কোটি কোটি টাকা খরচ করে তৈরি নতুন সংসদেও তো জল চুঁইয়ে পড়ছে। জনসাধারণ জানতে চাইছে বিজেপি সরকারের আমলে তৈরি সব কিছুতেই জল চুঁইয়ে পড়া বিজেপির সুচিন্তিত নকশার অংশ কি না!’’
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দিল্লি। ইতিমধ্যেই সেখানে ৭ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। বুধবার সংসদ ভবনের বাইরেও হাঁটুজল জমে। নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ প্রধানমন্ত্রী মোদির স্বপ্নের প্রকল্প ছিল। শত বিরোধিতা সত্ত্বেও কোটি কোটি টাকা খরচ করে দিল্লিতে সেন্ট্রাল ভিস্তা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন মোদি । সেই নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে তাহলে কি গলদ ছিল, প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
