• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মণিপুরের নির্যাতিতাদের ফেলে পালিয়ে যায় পুলিশ , মণিপুরের ঘটনার চার্জশিটে বিস্ফোরক সিবিআই 

ইম্ফল, ৩০ এপ্রিল –  মণিপুরের দুই নির্যাতিতা এবং সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার হিংসার ঘটনায় চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। মণিপুর হিংসা নিয়ে পেশ করা চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে গতবছর ৩ মে মাসে প্রকাশ্য রাস্তায় দুই বিবস্ত্র নির্যাতিতা সাহায্য চাইলেও তাঁদের ফেলে পালিয়ে যায় পুলিশ। মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ওই দুই নির্যাতিতা পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনরকম সাহায্য

ইম্ফল, ৩০ এপ্রিল –  মণিপুরের দুই নির্যাতিতা এবং সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার হিংসার ঘটনায় চার্জশিট পেশ করল সিবিআই। মণিপুর হিংসা নিয়ে পেশ করা চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে গতবছর ৩ মে মাসে প্রকাশ্য রাস্তায় দুই বিবস্ত্র নির্যাতিতা সাহায্য চাইলেও তাঁদের ফেলে পালিয়ে যায় পুলিশ। মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ওই দুই নির্যাতিতা পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনরকম সাহায্য না করে উন্মত্ত জনতার হাতে তাঁদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। মণিপুরে গোষ্ঠী হিংসার সময় সে রাজ্যের চূড়াচাঁদপুর জেলায় দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর অভিযোগ ওঠে। তাঁদের একজনকে ধর্ষণ করারও অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় হয় গোটা দেশ।
 
গত বছর ৩ মে থেকে গোষ্ঠী হিংসায় দীর্ণ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুর। গত ৩ মে দুই নির্যাতিতার উপর যে অত্যাচার হয় গত ৪ মে সেই অভিজ্ঞতার কথা জানান ওই দুইজনের মধ্যে এক নির্যাতিতা । তাঁর দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করে। তিনি আরও জানান, সে দিন তাঁর বাবা এবং ভাইকে খুন করেছিল উন্মত্ত জনতা। কিন্তু অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি।

এই ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর গত অক্টোবর মাসে গুয়াহাটির একটি বিশেষ আদালতে চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। সেখানে এক নাবালক-সহ মোট সাত জনের নাম ছিল। যদিও তদন্তকারী আধিকারিকরা জানান, ঘটনার দিন প্রায় ৮০০ থেকে ১০০০ জনতা উন্মত্ত অবস্থায় দুই নির্যাতিতার পিছু নেন।

সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে সিবিআইয়ের চার্জশিট উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, উন্মত্ত জনতার হাত থেকে বাঁচতে দুই নির্যাতিতা এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুলিশের গাড়ির কাছে দৌড়ে গিয়ে সাহায্য চান । গাড়ির চালককে তাঁরা অনুরোধ করেন, সেখান থেকে তাঁদের উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু পুলিশের গাড়ির চালক বলেন, “চাবি নেই।” তখন ওই গাড়িতে বসেছিলেন নিগ্রহের শিকার হওয়া দুই পুরুষও। বার বার অনুরোধ করা হলে  গাড়ির চালক পালিয়ে যান। এরপর তাঁদের উপর অত্যাচার চালায় উন্মত্ত জনতা। আগেই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে এক নির্যাতিতা দাবি করেছিলেন যে, মণিপুর পুলিশের চার জন সদস্য ঘটনার দিন উপস্থিত থাকলেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সিবিআইয়ের চার্জশিটেও সেই কথারই উল্লেখ রয়েছে।

সেদিনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের গাফিলতি প্রকাশ্যে আসায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন মণিপুরের ডিজিপি রাজীব সিং। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতি প্রকাশ্যে আসার পর ইতিমধ্যেই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।’ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করা হলে আধিকারিক জানান, ‘এই মামলার তদন্ত সিবিআই করছে ফলে কোনও রকম আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হলে সেটা সিবিআই নেবে।’
 
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে মণিপুরে দুই নির্যাতিতাকে নগ্ন করে প্যারেড করানোর ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। এরপরই ঘটনার নিন্দায় সরব হয় গোটা দেশ। ঘটনার নিন্দা করে মুখ খোলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মামলাও দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। এর পর এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইকে। সেই ভিডিও সূত্র ধরে মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। যার মধ্যে ছিলেন এক নাবালকও। দীর্ঘ তদন্তের পর অবশেষে সেই মামলায় চার্জশিট পেশ করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।