দিল্লি, ২৪ ফেব্রুয়ারি – আগামী ১ জুলাই থেকে ভারতে কার্যকর হতে চলেছে দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি নতুন আইন। লোকসভা নির্বাচনের পরই দেশে কার্যকর হয়ে যাবে নয়া আইন। শনিবার এই ঘোষণা করল কেন্দ্র। গত বছরের শেষে দেশের পুরনো ফৌজদারি আইনের বদলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য বিল পাশ করায় কেন্দ্র। সেগুলি কার্যকর করা নিয়ে বিরোধীদের বহু আপত্তি থাকলেও, ১ জুলাই থেকে ওই তিন আইন কার্যকর করার কথা ঘোষণা করা হল।
অবশেষে দেশ জুড়ে কার্যকর হতে চলেছে দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি নতুন আইন। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে এই নয়া আইন কর্যকর হবে ১ জুলাই থেকে। ফলে ভারতীয় আইন ব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণভাবে মুছে যাবে ব্রিটিশ আমলে তৈরি হওয়া নিয়মগুলি।
১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ বা ভারতীয় দণ্ডবিধি বদলে হয়েছে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ বা ফৌজদারি দণ্ডবিধি পরিবর্তিত হয়েছে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’য়। ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’-এর বদলে আসতে চলেছে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’। এই বদলে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর অনুমোদন মিলেছিল গত বছর ডিসেম্বরে।
ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, কোড অফ ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর বা সিআরপিসি, এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন বা ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট এই তিন আইনের বদলের জন্য বিল পাশ হয়েছে সংসদে। গত ১১ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করেছিলেন। বিল পেশের সময় শাহ দাবি করেছিলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’ শীর্ষক তিনটি বিল আইন থেকে ‘ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ আমলের প্রভাব এবং দাসত্বের মানসিকতা’র বদল ঘটাবে।
এই তিনটি বিল নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিরোধীরা। ইন্ডিয়া জোটের তরফে অভিযোগ করা হয়, সরকার এই আইন নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে। এই আইনের বিরোধিতায় সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর বক্তব্য ছিল, “এই তিন বিল ভারতের সামগ্রিক নীতির উপর শুধু প্রভাব ফেলবে, তাই নয়। ভারতের জনজীবনের উপরও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। এই তিনটি বিল নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে যতবেশি সম্ভব আলোচনা করা উচিত।”
লোকসভা নির্বাচনের আগেই কেন্দ্রের এই ঘোষণা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। নির্বাচন পর্ব মিতে যাওয়ার পরই কার্যকর হবে এই নয়া আইন। এতে একটা বিষয় স্পষ্ট, লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী বিজেপি।