ত্রিপুরার চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনের প্রচারকে ঘিরে সরগরম এই রাজ্যের রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক অন্যতম বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নির্বাচনী প্রচার করেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
আজ মঙ্গলবার শেষ নির্বাচনী প্রচার রয়েছে ত্রিপুরায় তবে তার আগে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের একঝাঁক নেতানেত্রী নির্বাচনী প্রচারে ত্রিপুরায় রয়েছেন।
এই রাজ্যের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতানেত্রী নির্বাচনী প্রচার করছেন ত্রিপুরায়।
পশ্চিমবঙ্গ মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র নির্বাচনী প্রচারে ত্রিপুরায় রয়েছেন। তাঁর সভাগুলিতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূলের পাশে রয়েছেন। বিগত নির্বাচনে তৃণমূল সমর্থকদের বিজেপির দুষ্কৃতীরা ভোট দিতে দেয়নি।
কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রচণ্ড সন্ত্রাসের মধ্যেও ত্রিপুরার মানুষ ২৪ শতাংশ ভোট তৃণমূলকে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতি আস্থা রেখেছেন ত্রিপুরার মানুষজন।
এই উপনির্বাচনেও এখানকার আমজনতা তৃণমুল কংগ্রেসকে দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে।
বিপ্লব দেব মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চূড়ান্ত ব্যর্থ ছিলেন। তিনি ত্রিপুরাকে দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরার মানুষকে ভালোবাসেন।
আপনারা বাম-কংগ্রেস কর্মী মদতপুষ্ট পিছিয়ে ডিজে বাজাচ্ছে বিজেপির লোকজন। শুধু তাই নয়, মাইকের কানেকশন কেটে দেওয়ার পাশাপাশি প্রার্থীকে ভোট পর্যন্ত দিতে দেয়নি। মারধর করেছে।
কিন্তু ধমকে চমকে বিজেপিকে ভোট দিয়ে নিজের ভোট নষ্ট করবেন না। কারণ একমাত্র মমতাদি পারেন ত্রিপুরায় সুশাসন ফেরাতে।
পশ্চিমবঙ্গকে বামেদের অপশাসন থেকে রক্ষা করেছেন মমতাদি। মোদি-অমিত শাহকে রুখে দিয়েছেন তিনি। আসন্ন উপনির্বাচনে আপনারা তৃণমুলকে সমর্থন করুন।
আগামী দিনে দেখবেন এখানেও দুয়ারে সরকার চালু হবে। এই উপনির্বাচন সে কারণেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন সেমিফাইনাল।
২০২৩-এ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে। এখানেও বিজেপির পরাজয় সময়ের অপেক্ষা ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে মন্তব্য করেন ফিরহাদ হাকিম।
সোমবার ত্রিপুরার আগরতলা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী পান্না দেবের সমর্থনে প্রচারে অংশ নিয়ে ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন ‘ত্রিপুরায় যে জিনিস হয়, বাংলায় তা হয় না’।
বিগত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সভা করার জন্য অনুমতি পেল তৃণমূল আর তৃণমূলকে শেষ করা যাবে না এ বিষয়গুলি দেখেই বোঝা যায় বিরোধীদের ভয় পায় শাসক দল বিজেপি।
গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। ত্রিপুরা সহ যে সমস্ত জায়গায় বিজেপি আছে, সেখানে তৃণমূল লড়বে মানুষের স্বার্থে।’
কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে ফিরহাদ বলেন, ‘এখন রাহুল গান্ধিকে ইডি ডেকেছে বলে লাফালাফি হচ্ছে। যখন অন্য বিরোধী দলের নেতাদের মিথ্যাভাবে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলেছে তখন কংগ্রেসকে দেখা যায়নি, তারা রাস্তায় নামেনি।
বিজেপিকে কটাক্ষ করে ফিরহাদ বলেন, “তোমরা মেরেছো। কিন্তু জেনে রাখো, মার যে দেয় সে কাপুরুষ। মার যে খায় এবং দাঁড়িয়ে থেকে বলে আমি আমার লড়াইয়ে ঠিক সেই প্রকৃত পুরুষ। তৃণমুলকে মারধর করে শেষ করা যাবে না।
মানুষের স্বার্থে এই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হবই। তৃণমূল বিভাজনের রাজনীতি করে না। তৃণমূল সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে চলতে চায়।’
ত্রিপুরায় মানুষকে তৃণমূল প্রার্থীদের জোড়া ফুল চিহ্নে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থীদের জয়ী করার আবেদন জানান ফিরহাদ হাকিম।