উত্তরপ্রদেশের একই জেলা থেকে ১৩ জন ভোটকর্মীর মৃত্যু, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা 

লখনউ, ১ জুন –  উত্তরপ্রদেশের একই জেলা থেকে ১৩ জন ভোটকর্মীর মৃত্যু হল। এই ভোটকর্মীদের প্রত্যেকেরই উচ্চ রক্তচাপ এবং জ্বরের উপসর্গ ছিল বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে । কিন্তু তীব্র তাপপ্রবাহের দাপটেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে কি না, তা  এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি ।

উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরে ভোটের দায়িত্বে থাকাকালীন  ৯ জন হোমগার্ড এবং চার আধিকারিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। এক সংবাদ সংস্থাকে স্টেট মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ চিকিৎসক রাজ বাহাদুর কমল জানিয়েছেন, যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। 

হোমগার্ডের কমান্ড্যান্ট বিকে সিংহ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ২৩ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এঁদের ১ জন পিএসি জওয়ান, ১ জন দমকলকর্মী এবং ১ জন পুলিশকর্মী। মির্জাপুরে শেষ দফায় ভোট চলছে। এই জেলাতেই ভোটের কাজে পাঠানো হয়েছিল হোমগার্ডের কর্মীদের। ভোটের আগেই ৬ হোমগার্ডের মৃত্যু হয়। বেশ কয়েক জন কর্মী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

হোমগার্ড কমান্ড্যান্টের কথায়, “প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হোমগার্ডের কর্মীরা। এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে গোন্ডা জেলার ২ জন, প্রয়াগরাজের ২ জন, ১ জন বস্তির, ২ জন মির্জাপুরের, ১ জন কৌশাম্বীর এবং ২ জন  হোমগার্ড জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে।” গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে উত্তর ভারত জুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ,পঞ্জাব, হরিয়ানা। তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পৌঁছেছে। কানপুরে শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৮.২ ডিগ্রি।


এদিকে শুক্রবার বিহার প্রশাসন জানিয়েছিল, তাপপ্রবাহের জেরে ৪৮ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।  এদের মধ্যেও  ১০ জন ভোটকর্মী ছিলেন । বিহারের প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোজপুরে ৫ জন ভোটকর্মীর মৃত্যু হয়েছে গরমে। রোহতাসে গরমে মৃত ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন ভোটকর্মী। তাঁদের মধ্যে ২ জন ভোজপুর এবং ১ জন বক্সারে ভোটের কাজে গিয়েছিলেন।

পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রার মধ্যেই শনিবার ভোট হয়  বারাণসী ও আশপাশের বেশ কিছু লোকসভা আসনে। তবে ভোট নিয়ে উন্মাদনা অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়  গত কয়েকদিনের মৃত্যু মিছিলে।  গোটা উত্তর প্রদেশে মৃত্যু পাঁচশো ছুঁতে চলেছে। ওয়াকিবহাল মহলের খবর, এমন পরিস্থিতির নজির নেই। কয়েক হাজার মানুষ অসুস্থ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বহু মানুষ।

ভয়াবহ অবস্থা বারাণসীর মণিকর্ণিকা শ্মশান ঘাটের। গত ৪৮ ঘন্টায় আসা অধিকাংশ দেহ দাহ করা সম্ভব হয়নি। সেখানে ৭০০ মরদেহ জমে গিয়েছে। স্বজনেরা দেহ বরফ চাপা দিয়ে রেখে দাহের অপেক্ষায় স্বজনরা।