দিল্লি, ২৩ মার্চ – দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় ধৃত বিআরএস নেত্রী কে কবিতাকে আরও তিন দিন ইডি হেফাজতের নির্দেশ দিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। শনিবার কবিতাকে আদালতে হাজির করানো হয়। শুনানিতে জামিনের আবেদন করেছিলেন তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও-এর কন্যা কে কবিতা । এদিকে তাঁকে আরও পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে পাল্টা আবেদন করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আদালতে ইডি দাবি করে, আবগারি মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তের বয়ানকে সামনে রেখে কবিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এমনকি, তাঁর মোবাইল থেকে প্রাপ্ত তথ্য সম্পর্কেও জেরা করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। যদিও ইডি কর্তাদের দাবি, অনেক তথ্যই ফোন থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। সেই সব তথ্য উদ্ধার করার জন্য বিআরএস নেত্রীর ফোন ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। শনিবারও ইডি দাবি করে, কবিতা আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দেওয়ায় অভিযুক্ত।
শনিবার আদালতে ইডির পক্ষে সওয়াল করেন জ়োয়েব হুসেন। তিনি আদালতে আবগারি মামলায় কবিতার এক আত্মীয়ের কথা উল্লেখ করেন। ইডি জানায়, তেলেঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও-এর কন্যা তথা কবিতার ভাগ্নে মেখা সারণের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিআরএস নেত্রী কে কবিতার উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা রয়েছে। সেই কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো তাঁকে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইডির তরফে জানানো হয় হেফাজতে থাকাকালীন ২৪ ঘণ্টা অন্তর কবিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। কবিতার পক্ষর আইনজীবী নীতেশ রাণা জামিনের আবেদন জানান। যদিও ‘তদন্তের অগ্রগতি’র কথা উল্লেখ করে কবিতার জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডি।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ১৫ মার্চ দুপুরে কবিতার হায়দরাবাদের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। সেদিনই বিকেলে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। ইডির গ্রেফতারি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেন কবিতা। ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন । যদিও শীর্ষ আদালত কবিতার আবেদনে সাড়া দেয়নি। নিম্ন আদালতে জামিনের আবেদন করার পরামর্শ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বিশেষ বেঞ্চ শুনানির সময় জানায়, কবিতাকে অবশ্যই নীতি মেনে পদক্ষেপ করতে হবে। কারণ শীর্ষ আদালতে এভাবে সরাসরি জামিনের আবেদন করা যায় না।
কবিতাকে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত বছর জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তবে সম্প্রতি তিনি ইডির তলব এড়িয়ে যান। এই মামলার চার্জশিটে ইডির অভিযোগ, দিল্লির তৎকালীন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আবগারি সংক্রান্ত নীতির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী শিশোদিয়া নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে দক্ষিণ ভারতের যে ব্যবসায়িক সংস্থাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন, কবিতা তার ৬৫ শতাংশের মালিক।
ইডির দাবি, দিল্লির আবগারি নীতিতে বিশেষ সুবিধা পেতে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়ার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন কবিতা। সুবিধা পাওয়ার বিনিময়ে তিনি আপ নেতাদের ১০০ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছে ইডি।