• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

জোট সরকার টিকিয়ে রাখতে হবে : শরদ পাওয়ার

শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে মহারাষ্ট্রে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি তৈরিতে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ঘােষণা করেছেন।

শরদ পাওয়ার (File Photo: IANS)

শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে মহারাষ্ট্রে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি তৈরিতে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ঘােষণা করেছেন। এমনকী সিএএ কার্যকর করার ক্ষেত্রেও রাজ্যের পক্ষে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে না বলে তিনি মন্তব্য করায় জোটের মধ্যে অসন্তোষ ঘনিয়েছে। এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলােচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য বিজেপি’র দীর্ঘদিনের শরিক দল শিবসেনার সঙ্গে ক্ষমতার সময় ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের ফলে বিজেপি-শিবসেনা মহারাষ্ট্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলেও জোট ভেঙে যায় এবং মূলত এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের উদ্যোগে দুই বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মেরুর দল কংগ্রেস-এনসিপি ও শিবসেনার জোট রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে।

মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সিন্ধুদুর্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, সিএএ এবং এনপিআর দুই পৃথক বিষয়। সিএএ প্রয়ােগ হলেও কারও কোনও ভয়ের কারণ নেই। কিন্তু এনআরসি তৈরির কাজ এখনই শুরু হচ্ছে না। কেন্দ্র সরকারও এনআরসি নিয়ে কোনও নির্দেশ পাঠায়নি। তিনি জানান, এনআরসি নিয়ে সারা দেশে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে তার ফলে কেন্দ্র এখনই তা প্রয়ােগে উদ্যোগী নয়। কিন্তু এনআরসি তৈরির কাজ শুরু হলে শুধু হিন্দু বা মুসলিম নয় আদিবাসীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন।

অন্যদিকে কংগ্রেস-এনসিপি সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআরের ঘাের বিরােধী। দুই দলের পক্ষে এব্যাপারে তাদের বিরােধিতা করে জানিয়েছে, সিএএ আইনের অন্যতম প্রধান ধারা হল পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আগত মুসলিম ব্যতীত হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান প্রভৃতিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ফলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি থেকে আগত মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করা হবে বলে দুই দলের পক্ষেই প্রচার চালানাে হচ্ছে।

কংগ্রেস-এনসিপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির এনআরসি দেশে আপাতত স্থগিতের যে আশ্বাস দিয়েছেন তা বিশ্বাসযােগ্য নয়। কারণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে এনআরসির কাজ চালু করায় তার সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে এনপিআর চালু করার ক্ষেত্রেও নানান সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এনপিআরকে ‘জনগণনা’ আখ্যা দিলেও দেশের অধিকাংশ কংগ্রেস শাসিত সরকার এনআরসির প্রথম পর্যায় হিসেবে দেখছে এবং তা কার্যকর করা থেকে বিরত রয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রতি দশ বছর অন্তর জনগণনা হয়ে থাকে সাম্প্রতিক এনপিআরও তাই এতে কারও কোনও ক্ষতির আশঙ্কা নেই বলে তিনি সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছেন। এর ফলে সেনা সাংসদরা সংসদে সিএএ’র সমর্থনে ভােট দিয়েছেন এবং রাজ্যসভায় সেনা সদস্যরা অনুপস্থিত থেকে বিজেপির সিএএ পাশ করানােতে সাহায্য করেছে। ফলে দুই মেরুর আদর্শে বিশ্বাসী জোট সরকারের মধ্যে সঙ্কট ঘনিয়ে এসেছে।

এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার জানান, তাঁর দল সংসদে এবং রাজ্যসভায় সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর’র বিরুদ্ধে সােচ্চার হয়েছে। কিন্তু ন্যূনতম সাধারণ কর্মসুচির ভিত্তিতে তিন দলের শাসন কায়েম হয়েছে, মহারাষ্ট্রের মানুষের স্বার্থে তা টিকিয়ে রাখতে হবে কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলােচনা করা হবে বলে শরদ পাওয়ার সাংবাদিকদের জানান।