কেজরির জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে আবেদনের শুনানির দিন ঠিক করবেন প্রধান বিচারপতি 

দিল্লি, ২৮ মে –  দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদন প্রত্যাখ্যান করল সুপ্রিম কোর্ট। অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ সাতদিন বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে জরুরি শুনানির আর্জি জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু তাঁর আবেদনে জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হবে না বলে জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার অ্যাপেক্স কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এই মর্মে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।
 
অবকাশকালীন বেঞ্চে বুধবারই মামলার শুনানি হোক, এমন আবেদন জানিয়েছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু মঙ্গলবার সেই মামলা পাঠানো হয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে। তিনিই ঠিক করবেন কবে কেজরিওয়াল মামলার শুনানি হবে।
 
আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তিহাড় জেলে ছিলেন তিনি। তবে নির্বাচনী প্রচারের জন্য জেলের বাইরে আসতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। শীর্ষ আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে। গত ১০ মে তিনি জামিন পান। লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের জন্য তাঁকে মুক্তি দিয়েছিল আদালত। ১ জুন সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। শর্ত অনুযায়ী, ২ জুন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। 
 
জামিনের সঙ্গে সঙ্গে কেজরিকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এই ২১ দিনে তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ভবন কিংবা সচিবালয়ে যেতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলা নিয়ে কোথাও কোনও মন্তব্য করতেও নিষেধ করা হয়েছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বেরিয়ে দলের হয়ে টানা প্রচার করেছেন তিনি।
 
সোমবার নতুন করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল। আবেদনে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা করানো দরকার। গুরুতর কোনও অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও করা হয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে নিয়ে। আপের তরফে জানানো হয়, একাধিক উপসর্গ রয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। অবিলম্বে নানা মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন রয়েছে তাঁর।
 
এ প্রসঙ্গে নিজেও মুখ খুলেছেন আপ সুপ্রিমো। ভাটিন্ডাতে নির্বাচনী প্রচারে তিনি বলেন, ‘আমার ওজন কমে গিয়েছে অনেকটাই। এটা গুরুতর অসুস্থতার একটি উপসর্গ। একাধিক মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই চেক আপ করানোর জন্যই আমি দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে সাতদিন অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছি। টেস্টের রিপোর্ট এলে জানা যাবে ঠিক কী গুরুতর অসুখে আমি ভুগছি।’
সেই কারণেই আরও সাত দিন জেলের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। মঙ্গলবার বিচারপতি জেকে মহেশ্বরী এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ জানায়, প্রধান বিচারপতিই এই আবেদনটি তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
 
প্রসঙ্গত বলা যায়,৫০ দিনের অন্তর্বর্তী জামিনে গত ১০ মে মুক্তি দেওয়া হয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় এই মুহুর্তে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি তিনি। ১ জুন পর্যন্ত তাঁর জামিনে মুক্ত থাকার মেয়াদ। এরপর ২ তারিখ ফের আত্মসমর্পণ করতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে।