কেন্দ্র দেশে নতুন করে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে : শিবসেনা

শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে (File Photo: IANS)

লােকসভায় নাগরিকত্ব (সংশােধনী) বিল পেশ করার আগেই শিবসেনার পক্ষে হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের ‘নির্দিষ্ট বাছাই’ হিসেবে নির্ধারণ করলে দেশে ধর্মযুদ্ধ বেধে যেতে বাধ্য বলে মন্তব্য করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার দেশে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে নতুন করে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

শিবসেনার আঠারাে সাংসদ এদিন দলের মুখপত্র ‘সামনায়’ তাদের বক্তব্য পেশ করে জানান, দেশে সমস্যার কোনও অভাব নেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল নিয়ে এসে এক নতুন সমস্যার সৃষ্টি করতে চাইছে। কেন্দ্র সরকার হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে এক অদৃশ্য পর্দার সৃষ্টি করতে চাইছে।

মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এটা সত্যি যে হিন্দুস্থান ছাড়া হিন্দুদের অন্য কোনও দেশ নেই। কিন্তু কেবল হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদেরই বাছাই করলে ধর্মের ভিত্তিতে লড়াই বেধে যাবে না- কি? ভােট ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে। নাগরিকত্ব সংশােধনী বিল চালু করলে তা কখনই দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে না’।


অন্যদিকে শিবসেনার পক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির কাছে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে হিন্দুদের ওপর অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগ নিরসনে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানানাে হয়েছে। পাকিস্তানের মতাে অন্যান্য যে সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রে শিখ, খ্রিস্টান, পার্শি, জৈন এবং হিন্দুদের ওপর অত্যাচার চালনাে হচ্ছে তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই এব্যাপারে তাঁর সক্ষমতা দেখিয়েছেন। এই জনগােষ্ঠীর মানুষদের যাতে বসবাসকারী দেশ ত্যাগ করতে না হয় তা প্রধানমন্ত্রীর দুঃসাহসিক অভিযানের মাধ্যমেই আবারও প্রমাণ করার সময় এসেছে।

এতেই দেশের অভ্যন্তরীন নিরপত্তাও মজবুত হবে। বালাকোট ও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা মাথায় রেখেই এই মন্তব্য পেশ করা হয়েছে। মুখপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে বিজেপির ঘােষিত নীতি অনুযায়ী। এক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীদের সঠিক সংখ্যা জানতে হবে। কিন্তু লাখ লাখ হলে তারা ভারতের কোন স্থানে বাস করতে পারবেন?

মুসলিম দেশেগুলিতে হিন্দুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।কন্যাদের সেখানে অপহরণ করা এবং যৌন অত্যাচার এক নিত্যনৈত্তিক ঘটনা এবং অবশেষে ধর্মান্তরিত করা। উত্তর পূর্বের অধিকাংশ রাজ্যই ক্যাবের বিরােধীতা করে আসছে। এমনকী বিহারে জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর সঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও সেখানকার সরকারও কেন্দ্রীয় সরকারের ক্যাব প্রণয়নের বিরােধিতা করছে। এতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক চরিত্রই বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা। পশ্চিমবঙ্গও এই বিলের বিরােধিতা করছে।

মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে আরও উল্লেখ করা হয়েছে মহারাষ্ট্রে বসবাসকারী অনুপ্রবেশকারীরা ইতিমধ্যেই নাগরিক সুবিধা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছে। এক্ষেত্রে গুজরাত ও কর্নাটক রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের মানবিক বিচারে বসবাসের ব্যবস্থা করে এক দৃষ্টান্তমূলক স্থাপন করতে পারে বলে উল্লেক করা হয়েছে।