মুম্বাই, ২ জুলাই – বিদেশে পলাতক ভারতীয় ব্যবসায়ী বিজয় মাল্যের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় পরোয়ানা জারি করল মুম্বাইয়ের সিবিআই আদালত। ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক থেকে ১৮০ কোটি ঋণ নিয়ে শোধ না দেওয়ার অভিযোগে এই জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করেছে সিবিআই আদালত। এই জামিন অযোগ্য পরোয়ানাটি জারি করা হয় গত ২৯ জুন। কিন্তু, সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক এসপি নায়েক নিম্বলকরের জারি করা এই পরোয়ানার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে সোমবার রাতে। পরোয়ানায় সিবিআই বলেছে, কিংফিশার এয়ারলাইন্সের প্রাক্তন কর্তা বিজয় মাল্য ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ওভারসিজ ব্যাঙ্ক থেকে ১৮০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করেননি। এর ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
ভারতে আর্থিক তছরুপ করে দেশ ছাড়েন মাল্য। তারপর থেকে একাধিক মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভারতীয় কোনও তদন্তকারী সংস্থা বিজয়ের নাগাল পায়নি। বর্তমানে তিনি লন্ডনে রয়েছেন। তাঁকে দেশে প্রত্যর্পণ করাতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। নতুন যে মামলায় সিবিআই ‘পলাতক’ ব্যবসায়ীকে ধরতে চায়, তা-ও ঋণ শোধ না করার কারণে। সিবিআই তার পরোয়ানায় উল্লেখ করেছে, বন্ধ হয়ে যাওয়া কিংফিশার এয়ারলাইন্সের মালিক বিজয় মাল্য সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন।কিন্তু তিনি তা শোধ করেননি। তিনি ইন্ডিয়ান ওভারসিজ় ব্যাঙ্কের আর্থিক ক্ষতি করেছেন। ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল এই ঋণ নেওয়া হয়েছে। এদিকে ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী, অর্থনৈতিক অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তপ্রক্রিয়া চললে এক দেশ অপর দেশের সঙ্গে তদন্ত সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদান করবে। এর আগে মাল্যকে প্রত্যর্পণের চেষ্টা করলেও আইনি জটের কারণে তাতে সফল হয়নি ভারত।
বিজয় মাল্যকে পরোয়ানা জারি করার যুক্তিতে সিবিআই বলে, উনি যেহেতু ‘পলাতক’, সেহেতু বিজয় মাল্যর বিরুদ্ধে খোলা জামিনঅযোগ্য ধারায় পরোয়ানা জারি করা যেতে পারে। কোটি কোটিপতি এই ব্যবসায়ীকে হাতে পেতে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার। কিন্তু, বারবারই তিনি বিদেশি আদালতে ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন। সিবিআইয়ের অভিযোগ, মাল্য অসততার এবং প্রতারণার উদ্দেশ্যেই ঋণ নিয়েছিলেন। মোট ঋণের থেকে ৩৮.৩০ কোটি টাকার ঋণকে শেয়ারে বদল করেছিলেন। পলাতক বলে বিজয় মাল্যকে ‘ফেরার’ বলা যায়। যিনি বর্তমানে ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন।