বুলডোজার দিয়ে অপরাধীর বাড়ি ভেঙে দেওয়া সংবিধান বিরোধী, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার শীর্ষ আদালত রায় দেয়,’ কোনও ব্যক্তি অভিযুক্ত, এমনকি দোষী প্রমাণিত হলেও তাঁর সম্পত্তি ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই। বুলডোজার বিচার সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক।’ বিচারপতি গাভাই ও বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ এদিন রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলে, ‘কেউ কোনও অপরাধ করেছে বলে, যদি কোনও প্রশাসক খেয়ালখুশি মতো তাঁর বাড়ি ভেঙে দেয়, তাহলে বুঝতে হবে তিনি আইনবিরোধী কাজ করছেন। একজন প্রশাসক নিজেই বিচারক হয়ে উঠতে পারেন না। সংবিধান সেই অনুমতি তাঁকে দেয়নি।’ সুপ্রিম কোর্ট আরও জানায়, কোনও প্রশাসক এইভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তাঁকে সেই কাজে দায়বদ্ধ করতে হবে। এই স্বেচ্ছাচারিতার কোনও স্থান নেই।
এই সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি চাইলে পাল্টা মামলা করতে পারেন। সারা দেশেই এই নির্দেশ লাগু হবে বলে জানিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই। সেই সঙ্গে তিনি এও জানান, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে সেই ব্যক্তি বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। নাগরিক অধিকার কোনওভাবেই লঙ্ঘন করা যাবে না।
সর্বোচ্চ আদালতের এই নির্দেশে স্বভাবতই চাপে উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেখানে অপরাধীদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়ে এক সময়ে বাহবা পেয়েছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। যোগী রাজ্যের এই বুলডোজার নীতি সংক্রামিত হয়েছিল মধ্যপ্রদেশেও।রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ ছিল, এই বুলডোজার নীতি আসলে বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতির এক হাতিয়ার। বাছাই করে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়ে সংখ্যাগুরু অংশের বহিব পেতে চেয়েছিলেন যোগী ও শিবরাজ, এমন বিতর্কও ওঠে।
কোনও ব্যক্তি অপরাধের মামলায় অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বুলডোজ়ার দিয়ে তাঁর বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলেও উপযুক্ত নিয়ম মেনেই এগোতে হবে প্রশাসনকে। পুলিশ-প্রশাসন কাউকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করে শাস্তি দিতে পারে না।