• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

পিএম কেয়ার্স তহবিলকে আইনি বৈধতা দিল শীর্ষ আদালত

পিএম কেয়ার্স তহবিলের অর্থ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে স্থানান্তর করার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।

সুপ্রিম কোর্ট (File Photo: iStock)

পিএম কেয়ার্স তহবিলের অর্থ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে স্থানান্তর করার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি পিএম কেয়ার্স তহবিলকে প্রকারান্তরে আইনি বৈধতাও দিল শীর্ষ আদালত।

কোভিড ১৯ সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করতে চলতি বছরে পিএম কেয়ার্স তহবিল গঠন করা হয়েছিল। ফলে ওই তহবিলে সংগৃহীত অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে স্থানান্তর করার আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে শীর্ষ কোর্টের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়, কোভিড ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য গঠিত তহবিলের অর্থ প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে পাঠানো যাবে না। পিএম কেয়ার্স গঠন করা হয়েছে গণ দাতব্য তহলি হিসেবে।

ফলে উক্ত ফান্ডের অর্থ জাতীয় ত্রাণ তহবিলে স্থানান্তর করার জন্য শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে কোনও নির্দেশ দেবে না। পিএম কেয়ার্স ফান্ডের যৌক্তিকতা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে শীর্ষ কোর্টের বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি আর সুভাষ রেড্ডি ও বিচারপতি এম আর শাহের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “পিএম কেয়ার্স একটি ভিন্ন তহবিল। গণ দাতব্য তহবিল হিসেবে ওই তহবিলের বৈধতা রয়েছে।

এর সমস্ত অর্থ প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে স্থানান্তর করার কোনও প্রয়োজন নেই। তবে সরকার যদি সঠিক মনে করে তাহলে পিএম কেয়ার্সের অর্থ বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে স্থানান্তর করতে পারে, এ ব্যাপারে কোনও বাধা নেই। পাশাপাশি জানানো হয়, কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলে অর্থ দান করতে পারেন।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রাইম মিনিস্টর সিটিজেন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড রিলিফ ইন এমার্জেন্সি সিচুয়েশন বা পি এম কেয়ার্স ফান্ড গঠন করেছিলেন। কোভিডে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় গঠিত ওই ফান্ডের চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ওই তহবিলের ট্রাস্টি হন।

যদিও আদালত স্পষ্ট করে বলেছে, নতুন কোনও পরিকল্পনার দরকার নেই। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ধারায় নভেম্বরে যে তহবিল গঠন করা হয়েছিল, তা কোভিড মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট। সেন্টার ফর পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশনের তরফে পিএম কেয়ার্সের অর্থ এনডিআরএফে স্থানান্তর করার আবেদন করা হয়েছিল।

স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের করা ওই আবেদনে বলা হয়, পিএম কেয়ার্স ফান্ডে যে পরিমাণ টাকা জমা পড়েছে, তা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে স্থানান্তর করার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া হোক। পিএম কেয়ার্স বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ধারা লঙ্ঘন করছে। পাশাপাশি দেশে বিরোধীদের মতে, যে কোনও ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় জাতীয় ত্রাণ তহবিল থাকতে কেন আরেকটি ফান্ড গঠন করা হল? তা নিয়ে জানতে আরটিআই আবেদন করলেও প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তা খারিজ করে দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘পিএম কেয়ার্স ফান্ড আইনগত দিক থেকে বৈধ ও স্বচ্ছ। অপ্রয়োজনীয়ভাবে, বিরোধীরা হাইকোর্টে ও শীর্ষ আদালতে পিএম কেয়ার্স ফান্ডকে নিশানা করেছেন। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিন থেকেই সরকারকে লাগাতার নিশানা করেছেন। আইনজীবী ও সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণও প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘কংগ্রেস সহ বিরোধীরা পিএম কেয়ার্সের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। শুধু তাই নয়, পিএম কেয়ার্স তহবিল গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘এটা মোদি সরকার। আমরা যে কোনও কাজ সঠিক ভাবে করি। পিএম কেয়ার্স একটি ট্রাস্ট। জনগণ-এর ট্রাস্টি। নিয়মিত অডিট করা হয়েছে। পিএম কেয়ার্স সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটে রয়েছে। যে কেউ দেখতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে কোভিড রোগিদের জন্য ৫০,০০০ ভেন্টিলেটরস কেনা হয়েছে। স্বাধীনতার পর এতগুলো ভেন্টিলেটর কেনা হল। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল ১৯৪৮ সালে শরণার্থীদের সহায়তা করা ও বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য গঠন করা হয়েছিল। কোভিড ১৯ জন্য তৈরি পিএম কেয়ার্স একটি রেজিস্টার্ড তহবিল’।