করােনা রােগীদের একটিবারের জন্য ফেরাননি অ্যাম্বুলেন্স চালক আরিফ। মার্চ থেকে এপর্যন্ত ছয় মাসে প্রায় ২০০ করোনা রােগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে শেষকৃত্য সবকিছুই নিজে হাতে সামলেছেন আরিফ।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর আম্বুলেন্সের স্টিয়ারিং থেমে গেল করােনার কাছে হার মেনে। যে আরিফ করেনা রােগীদের কাছে ছিলেন একজন ত্রাতা, সেই আরিফকে করােনা সংক্রমিত হয়ে সকলের কাছ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। দিল্লির এই অ্যাম্বুলেন্স চালিকের নাম আরিফ খান। দিল্লির শহিদ ভগং সিংহ সেবা দলের অ্যাম্বুল্যান্স চালাতেন ৪৮ বছরের আরিফ। এই বেসরকারি সংস্থা বিনামূল্যে, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দেয় রাজধানীতে।
জানা গিয়েছে, বহু রােগীকে হাসপাতালে পৌঁছনাে তা বটেই প্রায় ২০০ করােনায় মৃতের দেহ শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে গিয়েছেন আরিফ। শুধু তাঁর সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি নয়, ভয় ছিল নিজের পরিবার নিয়েও। তবে নিজেকে নিয়ে না ভাবলেও বাড়ির বাকিদের নিয়ে চিন্তা ছিল আরিফের। দিনের পর দিন তাই বাড়িই ফেরেননি।
গত ৩ অক্টোবর নিজের করােনা সংক্রমণ হয়েছে জানার পরে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানেই শনিবার মৃত্যু হয়েছে। শনিবার তার দেহ দিল্লির হিন্দু রাও হাসপাতাল থেকে শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে গিয়েছেন অন্য কোনও অ্যাম্বুল্যান্স চালক।
আরিফের সহকর্মীরা জানিয়েছে, কোভিড মৃতদেহ অনেকের পরিবারই আসে না শেষকৃত্যের সময়ে। সেই সব ক্ষেত্রে নিজের টাকা দিয়েও দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেছেন। না, কখনও রােগীর পরিচয় দেখেননি। নিজে মুসলমান হলেও অনেক হিন্দুর সৎকারে নিজে উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁর বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী ও তিন সন্তান। আরিফের স্ত্রী সন্তানদের আক্ষেপ, শেষ দেখাটা হল না।