তান্ত্রিককে যাবজ্জীবনের সাজা বম্বে হাইকোর্টের 

মুম্বাই, ৩ ফেব্রুয়ারি –  অসুস্থ নাবালিকাদের চিকিৎসা করে সারিয়ে তোলার অজুহাতে শ্লীলতাহানি এবং যৌন নিগ্রহের ঘটনায় এক ‘তান্ত্রিক’কে যাবজ্জীবনের সাজা দিল বম্বে হাই কোর্ট। এর আগেই ওই নির্দেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান অভিযুক্ত।  হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাই বহাল রেখেছে। এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই যুগে দাঁড়িয়েও মানুষ সন্তানকে সুস্থ করে তুলতে তান্ত্রিকের কাছে যাচ্ছেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এই মামলায় নম্র মানসিকতার কোনও স্থান নেই। কঠোর ভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে। 

ওই তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে প্রথম থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল ২০১০ সালে। তার পর ২০১৬ সালে নিম্ন আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায়। বম্বে হাই কোর্টও তাঁর সাজা লাঘব করেনি।

অভিযুক্ত ৪৫ বছরের ব্যক্তি নিজেকে তান্ত্রিক বলে দাবি করেন। ৬ জন বিশেষ ভাবে সক্ষম কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিশোরীদের বাবা-মা তাদের সুস্থ করতে ওই তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যান। তান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিশোরীরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন। অভিযোগ, সুস্থ করে তোলার নামে নির্যাতিতাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকাও নিয়েছিলেন ওই তান্ত্রিক। মোট ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা তিনি আদায় করেছেন অভিভাবকদের কাছ থেকে বলে অভিযোগ। কিন্তু এক সময় ওই কিশোরীদের পরিবারের সদস্যদের মনেও অবিশ্বাস দানা বাঁধে। তাঁরা পুলিশে অভিযোগ করেন।


তান্ত্রিকের বিরুদ্ধ মামলা ওঠে নিম্ন আদালতে। ওই আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায়। এর পর বম্বে হাই কোর্টে মামলা করেন তান্ত্রিক। সেখানেও একই সাজা শোনালেন উচ্চ আদালতের দুই বিচারপতি বিচারপতি রেবতী মোহিতে ডেরে এবং বিচারপতি মঞ্জুষা দেশপাণ্ডে। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এটি সম্পূর্ণ অন্ধবিশ্বাসের মামলা। অভিযুক্ত মানুষের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে তাঁদের ঠকিয়েছেন এবং যৌন নির্যাতনের মতো অপরাধ করেছেন। তাই তিনি কঠোর শাস্তির যোগ্য।