মুম্বই হামলার অন্যতম প্রধান চক্রী তাহাউর হুসেন রানা বৃহস্পতিবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে ফিরেছেন। দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে বিশেষ বিমান। রানাকে পালাম বিমানবন্দর থেকে এনআইএর সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ বুলেটপ্রুফ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ SWAT বাহিনী।
২০০৮ মুম্বই হামলার এই চক্রী তথা লস্কর-ই-তৈবার এই জঙ্গিকে আপাতত তিহাড় জেলেই রাখা হতে পারে। জানা গিয়েছে, তিহাড় জেলের যে ওয়ার্ডে তাঁকে রাখা হবে, সেখানে তাঁকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত তদন্ত প্রক্রিয়া থামিয়ে দিতে এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য রানার মতো মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গিকে নিকেশ করার চেষ্টা হতে পারে। আবার অনেকের ব্যক্তিগত আক্রোশেরও শিকার হতে পারেন। কিন্তু মুম্বই হামলার পুরো ষড়যন্ত্রের ব্লু প্রিন্ট খুঁজে বের করতে এবং অন্যান্য দোষীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করতে রানাকে বাঁচিয়ে রাখা খুবই জরুরি। এনআইএ-র হিসাবে সে মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি। অনেক চেষ্টায় তাঁকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। সেজন্য তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রানাকে কড়া নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে রানাকে কয়েক সপ্তাহ এনআইএ-র হেফাজতে রাখা হবে। এই বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ মতো যাবতীয় ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ফলে আপাতত কিছুদিন দিল্লির তিহাড় জেলই হতে চলেছে তাহাউর রানার ঠিকানা। ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসের চক্রান্তে অভিযুক্ত তাহাউর রানাকে বিচারের জন্য এরপর মুম্বই পুলিশের হেফাজতে পাঠাতে পারে এনআইএ। বিশেষ সূত্রে খবর, ২৬/১১ কাণ্ডে ধৃত এক মাত্র জীবিত জঙ্গি, পরে যার ফাঁসি হয়েছিল, সেই আজমল কাসভের সেল-ই হতে চলেছে রানার ঠিকানা।
উল্লেখ্য, তাহাউর রানার জন্ম পাকিস্তানে। পরবর্তীকালে তিনি কানাডার নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলি ওরফে দাউদ গিলানির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন রানা। সেই সময়ে তিনি অবশ্য মার্কিন নাগরিক ছিলেন। ভারতে প্রত্যর্পণ এড়াতে রানা চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি। কিন্তু শেষে রক্ষা হল না। মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা রানার আবেদন খারিজ করায় তাঁর সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপরই তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়।