জালিয়াতির নতুন অস্ত্রের সন্ধান পেলেন তদন্তকারীরা। এই নতুন অস্ত্র হল সিন্থেটিক ল্যাটেক্স, যার সাহায্যে বায়োমেট্রিকের সময় গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ নকল করে নিচ্ছে জালিয়াতরা। বিশেষ করে গ্রাম ও মফস্বলের অনলাইন পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করে থাকেন বহু মানুষ। আর সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেই সাধারণ মানুষের গচ্ছিত টাকা লুট করে নিচ্ছে অপরাধীরা। তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, সিন্থেটিক ল্যাটেক্স ব্যবহার করে প্রতারণা চক্র চালানোর একটি গ্যাংয়ের হদিস পেয়েছেন তাঁরা। সম্প্রতি বেশ কয়েকজনকে এই ধরণের অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই চক্রের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড গ্যাংয়ের জড়িত থাকার কথাও জানতে পেরেছে পুলিশ।
ব্যাঙ্কের গচ্ছিত টাকাতেও এবার থাবা বসাচ্ছে জালিয়াতরা। সিন্থেটিক ল্যাটেক্স- এই নতুন অস্ত্র ব্যবহার করে আত্মসাত করে নেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের টাকা। বিশেষ করে অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের টাকা থাকলেই তৎপর হয়ে উঠছে জালিয়াতরা। বায়োমেট্রিকের সময় তাঁরা গ্রাহকদের হাতের আঙুলের ছাপ নকল করে নিচ্ছেন। তা দিয়েই হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা। মুর্শিদাবাদে এই কৌশল প্রয়োগ করে গ্রাহকদের প্রতারণা করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার আনন্দ রায় বলেছেন, ‘গত এক মাস ধরে অভিযান চালিয়ে জাল আধার কার্ড ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঝাড়খণ্ড যোগ পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।’
পুলিশের দাবি, প্রতারণাচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে ঝাড়খণ্ড ও জামতাড়া গ্যাংয়ের যোগ পাওয়া গিয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্যও মিলেছে। তার ভিত্তিতে আরও বেশ কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে পুলিশ সূত্রে খবর। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আধার কার্ড তৈরির জন্য ঝাড়খণ্ডের ‘সার্ভিস প্রোভাইডার’ সিস্টেমে ‘লগ ইন’ করতে আইডি প্রাপকদের হাতের আঙুল স্ক্যান করতে হয়। সেই সময়েই সিন্থেটিক ল্যাটেক্স ব্যবহার করে হাতের ছাপ নকল করেন জালিয়াতেরা। এই পদ্ধতিতেই সর্বত্র গড়ে ওঠা ব্যাঙ্ক পরিষেবা কেন্দ্র ও অনলাইন সার্ভিস সেন্টারগুলি থেকে গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।