তিস হাজারি কোর্টে স্বাতী মালিওয়ালের গোপন জবানবন্দি

অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সমান দোষী বললেন নির্মলা
শুক্রবার ১৭ মে– মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের বাড়িতে হেনস্থা মামলায় আম আদমি পার্টির রাজ্যসভা সদস্য স্বাতী মালিওয়াল ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি দিতে দিল্লির তিস হাজারি আদালতে এলেন৷ শুক্রবার দুপুরে আদালতে যাওয়ার আগে স্বাতী এদিন সকালে প্রথমে এইমসে যান ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য৷ প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন মালিওয়ালের ডাক্তারি পরীক্ষা চলে৷ সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখের ভিতরে ক্ষত হয়েছে স্বাতী মালিওয়ালের৷
জানা যাচ্ছে, এদিন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে এক দল এসে প্রায় চার ঘণ্টা কথা বলেছেন আপের রাজ্যসভার সাংসদের সঙ্গে৷
স্বাতী নাকি সোমবারই পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে বিস্তারিত অভিযোগ করেছিলেন৷ তবে এদিন তাঁর অভিযোগ ও বয়ানের পর পুলিশ আইনি পদক্ষেপ করতে শুরু করল৷ এদিকে শুক্রবার সকাল ১১টার সময় বিবভ কুমারকে জাতীয় মহিলা কমিশনের দপ্তরে হাজিরে দিতেও বলা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সহকারী বিভাব কুমারের বিরুদ্ধে গতকাল, বৃহস্পতিবার যৌন হেনস্তা, শ্লীলতাহানি সহ বিভিন্ন ধারায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন৷ তারপর অভিযোগ করার পর থেকে দিল্লি পুলিশ বিভাবকে খুঁজে বেড়াচ্ছে৷ যদিও দুপুর পর্যন্ত তাঁর পাত্তা পাওয়া যায়নি৷
অভিযোগ, গত সোমবারই কেজরিওয়ালের বাডি়তে হেনস্তার শিকার হন স্বাতী৷ সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টা নাগাদ একটি ফোন আসে দিল্লি পুলিশের কন্ট্রোলরুমে৷ সেখানে ফোনের ওপারে থাকা মহিলা জানান, তিনি স্বাতী মালিওয়াল৷ বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর আপ্তসহায়ক মারধর করেছেন তাঁকে৷ এমন অভিযোগ পেয়ে তৎক্ষণাৎ সেখানে পৌঁছয় দিল্লি পুলিশ৷ তাঁদের সামনেও এই বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্বাতী৷ জানান, এ বিষয়ে পরে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন তিনি৷ পরদিনই অভিযোগ মেনে নেয় আম আদমি পার্টি৷ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই শোরগোল শুরু হয়৷ যা অব্যাহত গত কয়েকদিন ধরেই৷
এদিনই জাতীয় মহিলা কমিশনে তলব করা হয়েছিল কেজরি ঘনিষ্ঠ বিভাবকে৷ বেলা ১১টার সময় তাঁকে তলব করেছিলেন চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা৷ হাজিরার সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, শনিবারের মধ্যে বিভাব না এলে মহিলা কমিশনের একটি দল তাঁর বাডি়তে যাবে৷ রেখা আরও বলেন, কমিশনের তরফে নোটিস দিতে যাওয়ার সময় তাঁর স্ত্রী তা নিতে অস্বীকার করেন৷ শেষে দরজার উপর সাঁটিয়ে দিয়ে আসা হয় নোটিস৷
তবে স্বাতী মামলাটি ঘটনার দিন থেকে রাজনৈতিক রং নিতে শুরু করেছে৷ গতকাল কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধি বিষয়টির গুরুগম্ভীর এবং শাস্তিযোগ্য বলেই মন্তব্য করেন৷ এরপর শুক্রবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও এ বিষয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান৷ সীতারামন বলেন, ঘটনা ঘটেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাডি়র ভিতরে৷ শুধু তাই নয়, তাঁর ডানহাত বলে পরিচিত ব্যক্তি যখন মারধর করছেন, তখন বাডি়তেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সীতারামন আরও বলেন, এখানেই শেষ নয়, এই ঘটনার পর আম আদমি পার্টির শীর্ষ নেতা ক্ষমাটুকু পর্যন্ত চাননি৷ পরদিনই লখনউতে এক অনুষ্ঠানে অভিযুক্ত বিভাবের সঙ্গে তাঁকে দেখাও গিয়েছে৷