নরেন্দ্র মােদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেই দেশদ্রোহী’র তকমা জোটে। মােদী সরকারের বিরুদ্ধে বহু বারই এমন অভিযােগ করেছেন বিরােধী নেতা-নেত্রীরা। তবে সরকারের বিরােধিতা করলেই যে তা ‘দেশদ্রোহী’ হওয়া, তেমন মনে করে না দেশের শীর্ষ আদালত।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, “সরকার-বিরােধী মতপােষণ করা বা সরকারের বিরােধিতা করলেই তা দেশদ্রোহিতা, এমনটা বলা যায় না।জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছিলেন ফারুক। তাঁর মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন এক ব্যক্তি। সেই মামলারই শুনানিতে এমনটা জানাল শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে ফারুকের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন রজত শর্মা এবং নেহ শ্রীবাস্তব। তাঁদের দাবি, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলােপ করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা খারিজ করা প্রসঙ্গে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে চিন এবং পাকিস্তানের সাহায্য নিয়েছেন ফারুক।
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে শ্রীনগরের সাংসদ ফারুকের মন্তব্যেরও সমালােচনা করেছেন তাঁরা। ফারুককে দেশবিরােধী আখ্যা দিয়ে আবেদনকারীদের মন্তব্য, “ফারুকের সংসদীয় সদস্যপদ কেড়ে না নেওয়া হলে ভারতে তাঁর মতাে দেশদ্রোহীদের কাজকর্মেই উৎসাহ দেওয়ার শামিল হবে। দেশের ঐক্যের পক্ষে যা ক্ষতিকারক।”
এই মামলার শুনানিতে বুধবার বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউলের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের তরফে জানানাে হয়, কোনও দৃষ্টিভঙ্গি সরকারের মতের বিরােধী ও তার থেকে আলাদা হলেই তাকে দেশদ্রোহ বলা যায় পিটিশনটি খারিজ করার পাশাপাশি অভিযােগকারীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
ওই ব্যক্তি তাঁর পিটিশনে ফারুক আবদুল্লার বিরুদ্ধে ৩৭০ ধারা ফেরানাের ব্যাপারে চিন ও পাকিস্তানের সাহায্য চাওয়ার অভিযােগ তুলেছিলেন। কিন্তু নিজের অভিযােগ প্রমাণ করতে না পারায় পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
২০১৯ সালের অগস্টে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলােপ করে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে দেয় মােদী সরকার। সেই সঙ্গে ওই রাজ্যকে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ- দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয়। তার পর থেকেই ফারুকসহ উপত্যকার একাধিক রাজনীতিককে গৃহবন্দি করে কেন্দ্রীয় সরকার।
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব ৮৩ বছরের ফারুক। গৃহবন্দিত্ব কাটতেই রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের পক্ষেও দাবি জানিয়েছেন তিনি।