দিল্লি, ২৮ ফেব্রুয়ারি – রাজীব গান্ধি হত্যা মামলায় সম্প্রতি যাবজ্জীবনের সাজা থেকে মুক্তি পাওয়া সান্থান ওরফে সুথেনথিরাজার মৃত্যু হল। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চেন্নাইয়ের একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার চিকিৎসাধীন থাকাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। দীর্ঘদিন ধরে লিভারের অসুখে ভুগছিলেন সান্থান।
সান্থান ছিলেন শ্রীলঙ্কার নাগরিক। কয়েক দিন আগে তাঁকে রাজীব গান্ধি গভর্মেন্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই খবর জানিয়েছেন চিকিৎসক ড. ভি থেরানিরাজন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫।সিরোসিস ওফ লিভারে আক্রান্ত সান্থানের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এর আগে গত জানুয়ারি মাসেও শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সান্থনকে।
চেন্নাইয়ের রাজীব গান্ধি মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক থেরানিরাজন জানিয়েছেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় সান্থানের শারীরিক অবস্থা গুরুতর ছিল। এরপর অবস্থার ব্যাপক অবনতি ঘটে। আইসিইউতে রাখা হয়েছিল তাঁকে। পরে শারীরিক অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলে লিভার প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোর থেকে অবস্থার ফের অবনতি হয়। পেটে তরল পদার্থ জমে গিয়েছিল এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ফুলে গিয়েছিল। ভোর ৭টার সময় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ওই চিকিৎসক।
১৯৯১ সালে চেন্নাইয়ের শ্রীপেরেম্বুদুরে মানববোমার হামলায় মৃত্যু হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির । সেই হামলা চালায় টাইগারস অব তামিল ইলাম । সিবিআই-এর দাবি, সেই সংগঠনেরই সদস্য ছিলেন সান্থান ।১৯৯৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট রাজীব হত্যা মামলায় যে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল, তার মধ্যে ছিলেন সান্থান । বাকিরা ছিলেন মুরুগান ও পেরারিভালান। পরে তিনজনই মুক্তি পেয়ে যান ২০২২ সালে নভেম্বর মাসে। রাজীব পত্নী সোনিয়া, পুত্র রাহুল ও কন্যা প্রিয়াঙ্কা আগেই আদালতকে জানিয়েছিলেন, দোষীদের মুক্তির পক্ষে তাঁরা। যদিও কেন্দ্র অপরাধীদের মুক্তি দিতে ইচ্ছুক ছিল না। কিন্তু শেষপর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মুক্ত হন দোষীরা।
মুক্তি পাওয়ার পর ত্রিচির একটি স্পেশাল ক্যাম্পে ছিলেন সান্থান-সহ অন্যান্যরা। বিদেশি নাগরিকদের রাখার রীতি মেনেই তাঁকে ওই ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। কারণ, তাঁরা ছিলেন শ্রীলঙ্কার নাগরিক। তাঁদের কাছে কোনও পাসপোর্ট ছিল না। সেই শিবিরে থাকার সময় লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন রাজীব গান্ধি হত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত। কয়েকদিন আগে শ্রীলঙ্কায় মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য মাদ্রাজ হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন । কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁর।