জম্মু, ১০ জুন – জম্মু-কাশ্মীরে বাস লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। গুলি এসে লাগে বাস চালকের গায়েও। সামলাতে না পেরে বাস গড়িয়ে পড়ে খাদে।যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই তখন গুলিবিদ্ধ। খাদে গড়িয়ে পড়া বাসকে লক্ষ্য করে তখনও গুলি চালিয়ে যায় জঙ্গিরা। যাত্রীদের সবাইকে হত্যা না করে থামবে না বলে ধনুকভাঙা পণ তাদের। রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরে পুণ্যার্থীদের বাসে হামলার ঘটনার এ ভাবেই বিবরণ দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
জঙ্গি হামলার সময় পুণ্যার্থীরা সকলেই ছিলেন বাসের ভিতরে। অন্ততপক্ষে ২০ মিনিট ধরে বাস লক্ষ্য করে একনাগাড়ে গুলি চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলি চালানো দেখে অনেকেই মরার ভান করে পড়েছিলেন। যাতে সকলের মৃত্যু হয়েছে বুঝে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায় হামলাকারীরা। এমনভাবেই তারা চারিদিক থেকে বাস ঘিরে ফেলেছিল যে কেউ সামান্য নড়াচড়া করলেও, তাঁকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, বাসটিকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে জঙ্গিরা। ছয় থেকে সাত জন বাস লক্ষ্য করে টানা গুলিবৃষ্টি করতে থাকে। চালক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন । যাত্রীদের নিয়ে বাসটি গড়িয়ে পড়ে যায় খাদে। বৈষ্ণো দেবী থেকে বাসে ওঠার ৩০ মিনিটের মধ্যেই হামলার মুখোমুখি হতে হয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘আমি এক জন জঙ্গিকে দেখতে পেয়েছিলাম। গুলি চালাতে চালাতে সে বাসের দিকে এগিয়ে আসছিল। সকলকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল ওদের। বাস খাদে পড়ে যাওয়ার ২০ মিনিট পরেও সে গুলি চালানো থামায়নি।’’
বাসের অপর এক যাত্রী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “মোট ৬-৭ জন জঙ্গি ছিল। সবারই মুখ মাস্কে ঢাকা ছিল। প্রথমে ওরা চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে, এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। যখন বাসটি খাদে পড়ে যায়, তখন ওরা খাদে নেমে এসে বাস লক্ষ্য করে গুলি চালাতে শুরু করে। ওরা চাইছিল যে কেউ যাতে বেঁচে না থাকে।”
আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম। শুধু মনে হচ্ছিল, কখন বাড়ি ফিরব! হামলার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশকর্মীরা আমাদের উদ্ধার করতে আসেন।’’
গুলিবিদ্ধ হয়ে বাসের চালক এবং খালাসির মৃত্যু হয়েছে। চালক বিজয় কুমার দাসানু রাজবাগ গ্রামের বাসিন্দা এবং খালাসি অরুণ কুমার কাটরার কান্দেরা গ্রাম থাকতেন।
বৈষ্ণো দেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে এই হামলার দায় ইতিমধ্যে স্বীকার করেছে লস্কর-ই-তৈবার শাখা সংগঠন।জম্মু ও কাশ্মীরের হামলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৩০-এর বেশি। বাসে মহিলা এবং শিশুরাও ছিলেন। তাঁদেরও আঘাত লাগে।