‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দু’টি বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট

সংবিধানের প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দু’টি বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, অনুচ্ছেদ ৩৬৮ অনুসারে সংবিধান সংশোধন করতে পারে সংসদ। তবে সেই সংশোধনী অবশ্যই সংবিধানের মূল কাঠামো বা ‘বেসিক স্ট্রাকচার’-এর অনুসারী হতে হবে।

১৯৭৬ সালে দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস সরকার ৪২তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দ দু’টি অন্তর্ভুক্ত করেছিল। ভারত রাষ্ট্রের পরিচয় হিসাবে আগে থেকেই সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লিখিত ছিল সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক এবং প্রজাতান্ত্রিক, এই তিনটি শব্দ। ১৯৭৬ সালে তার সঙ্গে যুক্ত হয়, ওই নতুন দু’টি শব্দ।

কিন্তু এই দুই শব্দের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। মামলাগুলি একত্র করে সোমবার শুনানি হয় শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী, সমাজকর্মী বলরাম সিংহ এবং আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। মামলাকারীদের যুক্তি ছিল, ৪২তম সংবিধান সংশোধনী আসল সংবিধানকে বিকৃত করছে। সংবিধান সভার আলোচনায় সংবিধানের প্রণেতারা এই দু’টি শব্দকে প্রস্তাবনার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন বলেও দাবি করেন তাঁরা।


কিন্তু এই সকল যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে সংবিধান সংশোধনীর বিষয়ে সংসদকে ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধানই। তা ছাড়া এই দু’টি শব্দ এত বছর ধরে বহু বিচার বিভাগীয় পরীক্ষানিরীক্ষার ভিতর দিয়ে গিয়েছে বলেও পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের। ১৯৯৪ সালের এসআর বোম্মাই মামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই দু’টি শব্দ সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী নয়।