১১ জুলাই সিবিআইয়ের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর চূড়ান্ত রায় জানাবে শীর্ষ আদালত
দিল্লি, ৮ জুলাই– কেন্দ্রের অস্বস্তি বাডি়য়ে নিট-ইউজি ডাক্তারির কোর্সের প্রবেশিকা পরীক্ষা ফের নেওয়ার সিদ্ধান্ত জিয়ে রাখল দেশের শীর্ষ আদালত৷ সোমবার কেন্দ্রকে ভৎর্সনা করে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূডে়র প্রশ্নবাণ, প্রশ্নফাঁস হয়েছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ এর ব্যপ্তি কতটা তা জানতে হবে? কতজন পরীক্ষার্থী এর সুবিধা পেয়েছে? তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? তাঁর পর্যবেক্ষণ, “আগে থেকেই বলবেন না যে কিছু হয়নি৷” আদালতের মনোভাবে স্পষ্ট, নিট-ইউজি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্যকে তারা বিশেষ আমল দিচ্ছে না৷
নিট অর্থাৎ সর্বভারতীয় অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা৷ ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রতি বছর কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী বিস্তর খাটুনির পর পরীক্ষা উত্তীর্ণ নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেন এই নিটের পিছনে৷ অথচ সেই পরীক্ষাতেই বিরাট কেলেঙ্কারি অভিযোগ উঠেছে৷ প্রশ্নফাঁস হয়েছে৷ এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পডে়ছে৷ এদিন সেই সমস্ত আবেদনের শুনানি ছিল৷
এদিন, প্রশ্নফাঁস নিয়ে কেন্দ্র এবং এনটিএ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তলব করল শীর্ষ আদালত৷ প্রধান বিচারপতির নির্দেশ, বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে কেন্দ্র, এনটিএ ও সিবিআইকে হলফনামা জমা দিতে হবে৷ পরবর্তী শুনানি ১১ জুলাই ধার্য করেছে শীর্ষ আদালত৷ আদালত তার রায়ে বলেছে, সিবিআইয়ের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর তারা চূড়ান্ত রায় জানাব৷ তবে, এদিনই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে কোন কোন ক্ষেত্রে অনিয়মকে মান্যতা দিয়ে আদালত পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দেবে৷
প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগে দেশ উত্তাল হওয়ার পর কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দাবি করেছিলেন, প্রশ্ন খুব বেশি ছড়ায়নি৷ গত শুক্রবার পরীক্ষা সংঘটক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার বিপক্ষে মত দেয় আদালতে৷
তবে শীর্ষ আদালতের বিশ্লেষণে পরিষ্কার যে, শীর্ষ আদালত এই ব্যাপারে বিলম্ব করতে চায় না৷ বৃহস্পতিবারই সিবিআই আদালতে রিপোর্ট জমা করলে পুনরায় ভোটের বিষয়ে অবস্থান জানিয়ে দিতে পারে৷
উল্লেখ্য, ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-র ফল প্রকাশের পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল৷ চলতি বছর গত ৫ মে নিট ইউজি হয়েছিল৷ প্রথমে ফলপ্রকাশের কথা ছিল ১৪ জুন৷ কিন্ত্ত লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন অর্থাৎ ৪ জুনই ফলাফল প্রকাশিত হয়৷ দেখা যায়, ৭২০ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন ৬৭ জন৷ কমপক্ষে ১৫৬৩ পরীক্ষার্থীকে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়৷ ৬৭ জন প্রথম স্থানাধিকারীদের নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্ক থেকে দেশ জুডে় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরাট চক্র সামনে আসে৷ এরপর নিট পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে৷ এরপরই ফের ডাক্তারিতে স্নাতকে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষার আয়োজন করা হয়৷ কিন্ত্ত পরীক্ষা বসেন মাত্র ৭৫০ জন৷
২০২৪-এর নিট-ইউজি বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে৷ কোনওভাবেই নিট পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হবে না, সেই মামলায় সাফ জানিয়ে দিয়েছে এনটিএ এবং কেন্দ্রীয় সরকার৷ তাদের যুক্তি, পুরো পরীক্ষা বাতিল হলে লক্ষ লক্ষ পরীক্ষার্থী বিপদে পড়বেন৷